Download WordPress Themes, Happy Birthday Wishes

প্রতিপক্ষকে সাহায্য করতে হারছে বার্সেলোনা ?

ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ

চলতি মাসের মাঝামাঝি সময়ে বার্সেলোনা নিশ্চিত করেছে স্প্যানিশ লা লিগার শিরোপা । গত ১৪ মে এস্পানিওলকে হারিয়ে চার ম্যাচ হাতে রেখেই লা লিগা নিশ্চিত করে বার্সা । পুরো তিনটি মৌসুম পর বার্সাকে লিগ শিরোপা এনে দিয়েছেন কোচ শাভি হার্নান্দেজ ।

লিগ শিরোপা জয়ের পর বার্সার উপর থেকে নেমে গেছে উদ্বেগের পাহাড় । বলা যায় , চলতি মৌসুমে বার্সার জন্য কোন লড়াই আর অবশিষ্ট নেই । তারা বিদায় নিয়েছে উয়েফা ইউরোপা কাপ থেকে । পারে নি কোপা ডেল রে’র ফাইনালে খেলতে । শেষ টার্গেট লা লিগার শিরোপা ঘরে তুলেছে । তাই লিগের বাকী ম্যাচ এখন বার্সার জন্য স্রেফ নিয়ম রক্ষার ।

লিগ শিরোপা নিশ্চিত হবার পর বার্সেলোনা টানা দুই ম্যাচ হেরেছে রিয়েল সোসিদাদ আর ভায়াদোলিদের কাছে । এই দুই হারে বার্সার কোন ক্ষতি-বৃদ্ধি নেই । কিন্তু প্রতিপক্ষ দুই দলই পেয়েছে নিজেদের লক্ষ্যে টিকে থাকার অক্সিজেন ।

মঙ্গলবার (২৩ মে) ভায়াদোলিদের কাছে ১-৩ গোলে হেরেছে বার্সেলোনা । আগের ম্যাচে সোসিদাদের কাছে হার ছিল ১-২ গোলে ।

লক্ষ্য করার মতো বিষয় হচ্ছে , সোসিদাদ চলতি মৌসুমে লড়ছে আগামী উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের টিকেট পাওয়ার জন্য । বার্সেলোনার বিপক্ষে ম্যাচের আগে যা ছিল অনেকটাই অনিশ্চিত । কিন্তু বার্সাকে হারিয়ে তারা এগিয়ে যায় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ লড়াইয়ে । নিকট প্রতিপক্ষ ভিয়ারিয়েলকে পেছনে ফেলে । শেষ পাঁচ ম্যাচে তিনটি জয় আর এক ড্র নিয়ে তারা টক্কর দিচ্ছিল সোসিদাদের সাথে ।

সোসিদাদ লিগের শেষ পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের লক্ষ্যে দুর্দান্ত হয়ে উঠেছে সন্দেহ নেই । তারা কিছুদিন আগে রিয়েল মাদ্রিদকেও হারিয়েছে । কিন্তু রিয়েল মাদ্রিদ চলতি লা লিগায় ভুগছে ধারাবাহিকতার অভাবে । লিগে এখন পর্যন্ত হেরেছে আট ম্যাচ । অন্যদিকে বার্সা সোসিদাদের বিপক্ষে মাঠে নামার আগে হেরেছিল মাত্র তিনটি ম্যাচ । তাই নিজেদের মাঠে সোসিদাদের কাছে বার্সার হার কিছুটা হলেও প্রশ্ন তুলবেই । আর নির্দিষ্ট প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বার্সার খেলাও ছিল যাচ্ছেতাই রকমের সন্দেহজনক । তবে যাই হোক , বার্সাকে হারিয়ে সোসিদাদের বড় লাভ হয়েছে সন্দেহ নেই ।

বর্তমানে সোসিদাদ ৩৬ ম্যাচে ৬৮ পয়েন্ট নিয়ে প্রায় নিশ্চিত করেছে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ । ৩৫ ম্যাচে ভিয়ারিয়েল ৬০ পয়েন্ট নিয়ে কাগজে-কলমে বাঁচিয়ে রেখেছে সম্ভাবনা ।

আসা যাক ভায়াদোলিদের প্রসঙ্গে । তারা শংকায় ছিল রেলিগেশনের । আগের ম্যাচেও হেরেছে ক্যাডিজের কাছে । কিন্তু বার্সার বিপক্ষে জয়ে পাওয়া তিন পয়েন্ট তাদের জন্য মুল্যবান । ৩৬ ম্যাচে ৩৮ পয়েন্ট নিয়ে তারা উঠে এসেছে লিগ টেবিলের ১৭তম স্থানে ।তবে পুরোপুরি রেলিগেশন এড়াতে পারে নি এখনও । ৩৫ ম্যাচে ৩৫ পয়েন্ট পাওয়া গেটাফে আর সমান ম্যাচে ৩৪ পয়েন্ট নিয়ে এস্পানিওল তাদের হুমকি হয়ে আছে । ইতোমধ্যে ৩৫ ম্যাচে ২০ পয়েন্ট পাওয়া এলচের অবনমন নিশ্চিত । তাই দ্বিতীয় দল হিসেবে অবনমনের শংকায় তিনটি দল । এমনকি ক্যাডিজ আর আলমেইরাও সময় কাটাচ্ছে শংকার মধ্যে ।

লা লিগা শিরোপা নিশ্চিত হবার পর বার্সার খেলোয়াড়দের মধ্যে গা-ছাড়া ভাব এসেছে , সন্দেহ নেই । এটা স্বাভাবিক । আবার কোন লক্ষ্য না থাকায় বার্সেলোনাও অন্য ক্লাবের স্বার্থ দেখতেই পারে । এটাও ফুটবলে নতুন কিছু না । বরং ক্লাব ফুটবলে বিনিময় প্রথা খুব পুরাতন । কেউ সিকার না করলেও এটা দুই পক্ষের সমঝোতায় মাঝেমাঝেই হয়ে থাকে । এখানেই ম্যাচ বিক্রি করে দেয়ার মতো কোন স্বার্থও থাকে না সব সময় । বরং থাকে সুসম্পর্ক বজায় থাকার স্বার্থ । আজকের সাহায্য পাওয়া ভায়াদোলিদ ভবিষ্যতে বার্সার বিপদে দেখবে , এটাই এমন ম্যাচ ছেড়ে দেয়ার জেন্টলম্যান এগ্রিমেন্ট । আর এটা শুধু লা লিগায় হচ্ছে বলে মনে করার কোন কারণ নেই । ইটালির ফুটবলে এমন ঘটনার বহু প্রমাণ আছে ।

জার্মানির বুন্দেস লিগায় রেফারির দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে জরিমানা গুনেছিলেন বুরুশিয়া ডর্টমুণ্ডের জুড বেলিংহ্যাম । ২০০৫ সালে জার্মানির দ্বিতীয় বিভাগে পাতানো ম্যাচের ঘটনা অজানা থাকার কথা না । উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের বিপক্ষেও আছে পাতানো ম্যাচের অভিযোগ । ২০১৮ সালে নেইমারের হ্যাটট্রিকে গ্রুপ পর্বের ম্যাচে রেড স্টার বেলগ্রেডকে ৬-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছিল পিএসজি। ফরাসি পত্রিকা লা ইকুইপের দাবি, পিএসজি-রেড স্টার ম্যাচটি নাকি পাতানো ছিল! ফুটবলে এমন ঘটনার অভাব নেই । তাই বার্সার বিপক্ষে চলতি লিগে শেষ কয়েকটি ম্যাচের দিকে আঙ্গুল তোলা হলেও উড়িয়ে দেয়া যাবে না ‘অসম্ভব’ বলে ।

আহাস/ক্রী/০০৫