
ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ
বর্ডার-গাভাস্কার ট্রফির তিন ম্যাচ শেষ , কিন্তু এখনও ফয়াসালা হয় নি চার ম্যাচ সিরিজের । প্রথম দুই ম্যাচ জিতে ভারত সিরিজে দুর্দান্ত সূচনা করেছিল । অন্তত সিরিজ হারের কোন সম্ভাবনা নেই তাদের । কিন্তু তৃতীয় ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার জয়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে তাদের আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল । তাই আহমেদাবাদে সিরিজের শেষ টেস্ট জয়ের জন্য মরিয়া ভারত ।
৯ মার্চ থেকে আমদাবাদে ভারত বনাম অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে চার ম্যাচের টেস্ট সিরিজের শেষ এবং নির্ণায়ক ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে।শ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে জায়গা করে নিতে ভারতীয় দলকে যে কোনও মূল্যে এই ম্যাচ জিততেই হবে। অস্ট্রেলিয়া দল ইতিমধ্যেই বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে উঠেছে। আমদাবাদ টেস্টে ভারতীয় দল হারলে বা ম্যাচ ড্র থেকে যায়, তবেই নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে শ্রীলঙ্কার হার বা ড্রই ভারতকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবে।
সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটি ইন্দোরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যা আড়াই দিনে শেষ হয়েছিল। এমন পরিস্থিতিতে এই পিচকে তীব্র সমালোচনার ঝড় সামলাতে হচ্ছে। তবে এখন চতুর্থ ম্যাচটি হবে আমদাবাদে। যদি রিপোর্ট বিশ্বাস করা হয়, এখানে দুটি পিচ কভার করা হয়েছে। অর্থাৎ কোন পিচে ম্যাচটি হবে, তা প্রকাশ করা হয়নি। সোশ্যাল মিডিয়াতেও একইরকম কিছু দাবি করা হচ্ছে এবং উভয় পিচের ছবিও শেয়ার করা হচ্ছে। এই ফটোগুলিতে দেখা যায় যে একটি পিচে ঘাস পরিষ্কারভাবে দৃশ্যমান।
ভারতীয় গণমাধ্যম সুত্রের খবর , র পিচে অবিরাম পানি দেওয়া হচ্ছে এবং রোলারও চালানো হচ্ছে।রিপোর্টে বলা হচ্ছে, দুটি পিচের একটি খুবই সবুজ। অর্থাৎ এর ওপর প্রচুর ঘাস রয়েছে। এর উপর এই ম্যাচ হতে পারে। যদি এমনটা হয়, তাহলে এখানে ফাস্ট বোলারদের প্রাধান্য থাকবে। ঘাসের পিচ ফাস্ট বোলারদের জন্য সহায়ক বলে মনে করা হচ্ছে। কিন্তু ভারতের পিচ এক রাতেই সবুজ থেকে বাদামী হয়ে যেতে পারে। এমনটা অনেকবার দেখা গেছে। কোন পিচে সিরিজের চতুর্থ টেস্ট ম্যাচ খেলা হবে, তা ম্যাচের ঠিক আগে ঠিক হয়ে যাবে। ২০২১ সালে, এই একই ভেন্যুতে ভারত এবং ইংল্যান্ডের মধ্যে দুটি টেস্ট ম্যাচ খেলা হয়েছিল। এরপর দুটি ভিন্ন পিচে ম্যাচ হত। এর মধ্যে একটি টেস্ট ম্যাচ শেষ হয়েছে মাত্র দুই দিনে।
চতুর্থ টেস্ট ম্যাচের একদিন আগে গুজরাট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের একটি সূত্র জানিয়েছে যে আমাদের কাছে কালো এবং লাল মাটির উভয় পিচ রয়েছে। চতুর্থ টেস্ট ম্যাচটি কোন পিচে খেলা হবে তা শিগগিরই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কোন পিচে টিম ইন্ডিয়া আগামীকালের ম্যাচ খেলবে, এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। মানে কালকের ম্যাচে আবারও চমক দেখা যাবে। গুজরাট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের মতে, ভারত একটি স্পোর্টিং উইকেট পেতে পারে, কিন্তু রাতারাতি কিছু হতে পারে। দাবি করা হচ্ছে যে আমদাবাদে দুটি পিচ প্রস্তুত করা হয়েছে এবং দুটিই বর্তমানে কভার করা হয়েছে। এক পিচে ঘাস পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে এবং অবিরাম জল দেওয়া হচ্ছে। এর মাঝেই জুটো পিচের কথা ভেসে আসছিল। এখন খবর আসছে এর মধ্যে একটি পিচ আইপিএল-এর জন্য তৈরি করা হয়েছে। কয়েক সপ্তাহ আগে থেকেই এই পিচ তৈরি করা হচ্ছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
আহমেদাদের পিচ নিয়ে অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ জানিয়েছেন , ‘এখনো পর্যন্ত ভারতে যে কটা পিচে আমরা টেস্ট ম্যাচ খেললাম তার মধ্যে দেখে মনে হচ্ছে আহমেদাবাদ ব্যাটিংয়ের জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত পিচ।’
চতুর্থ টেস্টে যখন মুখোমুখি হবে ভারত- অস্ট্রেলিয়া, তখন আহমেদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামে ম্যাচটিকে আরও বিশেষ করে তুলতে প্রথম দিনেই মাঠে উপস্থিত থাকবেন ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রীরা। মোট ১,৩২,০০০ ধারণক্ষমতা সম্পন্ন এই স্টেডিয়ামে ওই বিশেষ দিনে একটি বিশ্বরেকর্ড তৈরি হতে পারে। টিকিট বিক্রির পরিমাণ দেখে আন্দাজ করা হচ্ছে যে ১,১০,০০০ দর্শক একসঙ্গে ম্যাচটি দেখতে পারবেন। এমনটা হলে ১০ বছরের পুরনো রেকর্ড ভেঙে দিয়ে বিশ্ব রেকর্ড গড়বে ভারত।
২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাস থেকে এই রেকর্ডটি ছিল অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডের নামে। সেই সময়ে অস্ট্রেলিয়া বনাম ইংল্যান্ড অ্যাশেজের ম্যাচ দেখতে এমসিজিতে উপস্থিত হয়েছিলেন ৯১,০৯২ টেস্ট ম্যাচ দেখতে উপস্থিত হয়েছিলেন। কিন্তু সেই রেকর্ডটি আজ আর সুরক্ষিত বলে মনে হচ্ছে না।
আহাস/ক্রী/০১০