Download WordPress Themes, Happy Birthday Wishes

গুরুত্ব প্রশ্নে ফুটবল নাকি ক্রিকেট, সিদ্ধান্ত দিতেই হবে

এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন

এই বিশ্বের একমাত্র সার্বজনীন খেলা ফুটবল ।  পৃথিবীর এমন কোন অংশ নেই যেখানে ফুটবল খেলা হয় না । তা সেটা বরফে ঢাকা মেরুঅঞ্চল হোক, কিংবা ধুধু মরুভমির দেশ হোক । সব অঞ্চলেই  ফুটবলের চর্চা আর জনপ্রিয়তা  আকাশচুম্বী ।  ফুটবলের সাথে তুলনা করা যায় , এমন কোন খেলা  মানব সভ্যতা আবিস্কার করতে পারেনি ।

একজন শেখ হাসিনার জন্য হলেও ফুটবলে সাফল্য দরকার

আমাদের বাংলাদেশেও ফুটবল দারুণ জনপ্রিয় ।  শুধু জনপ্রিয় না , নিঃসন্দেহে জনপ্রিয়তার শীর্ষেও ফুটবলই । যদিও গত দুই দশক ধরে ক্রিকেটকে ফুটবলের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দাঁড় করাবার চেষ্টা করা  হয়েছে নানাভাবে । আন্তর্জাতিক  পর্যায়ে খেলতে পারার  বাস্তবতা তুলে ধরে বলার  চেষ্টা করা হয়েছে , দেখো ,  ক্রিকেটে আমরা কত এগিয়ে গেছি !  

ক্রিকেট নিয়ে আমার কোন নেতিবাচক  মনোভাব নেই । ক্রিকেট মজার খেলা । তবে  ক্রিকেট তো কখনও আঞ্চলিক খেলার গণ্ডি পেরিয়ে সার্বজনীন মর্যাদা পায় নি । এখনও ক্রিকেট বিশ্বে সাত-আটটি কিংবা জোর করে ধরে নিলে দশটি দেশ ক্রিকেটে ভাল করছে । কিন্তু সেসব দেশেও ক্রিকেট এক নম্বর খেলা নয় । অস্ট্রেলিয়া , ইংল্যান্ড , দক্ষিণ আফ্রিকা , নিউজিল্যান্ডের মতো দেশেই জনপ্রিয়তার বিচারে ক্রিকেট অনেক পিছিয়ে ।  হ্যাঁ , ভারতে ক্রিকেটের দারুণ জনপ্রিয়তা রয়েছে ।  তবে  ক্রিকেট তাদের কাছে যত না খেলা , তারচেয়ে বেশী বাণিজ্য কিনা ভেবে দেখার সুযোগ আছে ।  আইপিএলের মতো ফ্রেঞ্চাইজি আসরের আইডিয়া   ক্রিকেটে দুনিয়ায় ছড়িয়ে দিতে পারা ,  তাদের সাফল্যও বটে ।

লেখক এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন ও সাফল্য পাওয়া বাংলাদেশ নারী ফুটবল দল

ভারতের অবশ্য ক্রিকেট নিয়ে মেতে ওঠা ছাড়া কোন উপায় ছিল  না ।  দেড়শো কোটির বেশী মানুষের দেশটি অন্য কোন দলীয় খেলায় বিশ্বপর্যায়ে নেই । এক সময় হকিতে   বিশ্বশক্তি ভারত এখন অনেকটাই পিছিয়ে । ফুটবলে ১৯৫০ সালে এসেছিল বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ । কিন্তু ‘খালি পায়ে’ খেলার  অনুমতি না পাওয়ায় ব্রাজিলে অনুষ্ঠিত  সেই আসরে খেলা হয় নি ভারতীয়দের ! ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপে অংশ নিলে ভারতের ফুটবল ইতিহাস হয়ত অন্যরকম হত । প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরাও তার সুফল পেতাম নিঃসন্দেহে ।  যেমন পেয়েছি ক্রিকেটে ।

২০০০ সালের জুনে বাংলাদেশ পায় ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থা ‘আইসিসি’র  পূর্ণ সদস্যপদ ।  সেই সময় থেকেই বাংলাদেশ পায় টেস্ট ক্রিকেট খেলার অধিকার । যদিও সেটা খুব সহজ ছিল না । কারণ ক্রিকেটে দুর্বল বাংলাদেশ ওয়ানডে পর্যায়ে ছিটেফোঁটা সাফল্য  পেলেও সেটা ধর্তব্যের মধ্যে ছিল না । তাই ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক মোড়ল দেশগুলো বরাবরই ছিল বাংলাদেশের মতো দলের টেস্ট স্ট্যাটাস পাওয়ার বিপক্ষে। কিন্তু সেই সময় আইসিসি’র সভাপতি  জগমোহন ডালমিয়ার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশ পেয়ে যায় টেস্ট মর্যাদা । এই ইতিহাস সকলের জানা ।

প্রশ্ন হচ্ছে , আইসিসি’র পূর্ণ সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ ক্রিকেটের কোন পর্যায়ে আছে ? ক্রিকেট  এখন তিনটি সংস্করণে  খেলা হচ্ছে । এদিকে সবচেয়ে সফল  একদিনের ক্রিকেটেও বাংলাদেশ এশিয়ার সেরা হতে পারে নি ।  ক্রিকেটে এশিয়ান লেভেল বলতে  আবার ভারত , পাকিস্তান , শ্রীলঙ্কা । সর্বশেষ যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশ আর আফগানিস্তান ।  নেপাল , হংকং , সিঙ্গাপুর , আরব আমিরাতরাও দেখি খেলছে । তবে ,  তারা এখনও আঁতুড়ঘরে । আসলে বিশ্ব পর্যায় দুরের কথা , ক্রিকেট এখনও এশিয়াতেই  শিকড় গাড়তে পারেনি  হাতেগোনা কয়েকটি দেশ ছাড়া । তবে একদিনের সীমিত ওভারের ম্যাচে বাংলাদেশ সমীহ জাগানো দল। সেদিক দিয়ে টেস্ট ও টি টুয়েন্টি ফরম্যাটে বাংলাদেশ এখনো নামের প্রতি সুবিচার করতে পারেনি।

বলা  হয় , বাংলাদেশে ক্রিকেটের জনপ্রিয়তা  বেশী ফুটবলের চেয়ে । আসলেই কি তাই ? হ্যাঁ , টেস্ট মর্যাদাপ্রাপ্তির শুরুর দিকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট  দেখতে মাঠে ভিড় করেছে মানুষ ।  ঘরোয়া ক্রিকেটেও দর্শক হয়েছে  ।  তবে খুব অল্প সময়ের জন্য । এখন বাংলাদেশের সাথে ভারত , পাকিস্তান কিংবা অন্য কোন দেশের ক্রিকেট ম্যাচেও দর্শক ভরা গ্যালারি চোখে পড়ে কদাচিৎ । ঘরোয়া ক্রিকেটে তো দর্শক আসছেই না । চাকচিক্যের ফ্রেঞ্চাইজি ক্রিকেট বিপিএলেও দর্শকক্ষরা । তাহলে ফুটবলের ঘরোয়া আসরে দর্শক কম হবার দোষ দেয়া হয় কেন ?

জাতির জনক চাইতেন বাংলাদেশ ফুটবলে দুর্দান্ত কিছু করুক

আসলে নব্বই দশকের পর থেকেই পরিকল্পিতভাবে ফুটবলের চেয়ে ক্রিকেটকে প্রাধান্য দেয়া শুরু হয়েছিল । হয়ত ভাবা হয়েছিল ,  ফুটবলের চেয়ে ক্রিকেটে প্রতিদ্বন্দ্বীর সংখ্যা কম । হাতেগোনা কয়েকটি দেশই ঘুরেফিরে ক্রিকেট খেলে । তাই এই খেলায় একটা অবস্থান তৈরি করা সম্ভব । সেই ভাবনা থেকেই  ক্রিকেটের উপর জোর দেয়া । বাজেট বাড়ানো । আন্তর্জাতিক মানের স্টেডিয়াম আর  অবকাঠামো  তৈরির উদ্যোগসহ যাবতীয় সুবিধা বরাদ্দ করা হয় ক্রিকেটের জন্য ।  ১৯৯৭ সালের আইসিসি ট্রফি চ্যাম্পিয়ন হয়ে বাংলাদেশ সুযোগ পায় বিশ্বকাপে খেলার ।  তারপর থেকেই মিডিয়া তথা সংবাদমাধ্যম মেতে  ওঠে ক্রিকেট নিয়ে ।  

একটা সময় সালাউদ্দিন ,  সাব্বির , মুন্না , কায়সারদের খেলা দেখার জন্য হাজার হাজার দর্শকের নিয়মিত উপস্থিতি, খেলার মাঠে ছিল নিত্য ঘটনা । তারা মাঠে খেলেছে , মিডিয়া কাভারেজ পেয়েছে ।তাদের বড় বড় ছবি ছাপা  হয়েছে পত্রিকার প্রথম পাতায় । তারা  হয়েছে বড় তারকা । যা দেখে একটি প্রজন্ম স্বপ্ন দেখেছে সালাউদ্দিন, কায়সার, মুন্না কিংবা সাব্বির হবার ।  আসলে , পন্য  বিপণনের মতো খেলাধুলার জনপ্রিয়তা আর প্রসারেও প্রচার একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ।  সেই সময়েও বাংলাদেশের ফুটবল খুব বড় সাফল্য পেয়েছে এমনটাও না । ফুটবলের স্বর্ণযুগেে বাংলাদেশ সাফের শিরোপা পায় নি । সম্ভবত নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে মিয়ানমারে একটা টুর্নামেন্ট  জেতাই ছিল জাতীয় দলের সেরা  সাফল্য ।  কিন্তু তবু দেশের মানুষের কাছে ফুটবল ছিল আরাধ্য । কারণ ঘরোয়া ক্লাব ফুটবল । অথচ সেই ঘরোয়া ফুটবল নিয়ে মিডিয়ার কার্যক্রম এখন দায়সারা ।

দেশীয় ফুটবল নিয়ে মিডিয়ার বিমাতাসুলভ আচরণ আমাকে হতাশ করে । এটা ঠিক , সাম্প্রতিক সময়ে ফুটবল সাফল্য বলতে কিছু নেই ।  ফিফা র‍্যাংকিংয়ে আমরা পিছিয়ে যাচ্ছি ক্রমশ । বিশ্ব  কিংবা এশিয়া লেভেল দূরে থাক , সাফ অঞ্চলেই আমাদের অবস্থান নড়বড়ে হয়ে পড়েছে ।  কিন্তু এটাও ঠিক ,  সম্প্রতি আমাদের ঘরোয়া ফুটবলে নতুন অনেক কিছুই যোগ । এই দেশে এখন খেলতে আসছেন বিশ্বকাপ খেলা ফুটবলারেরা । আসছে আর্জেন্টিনার জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া ফুটবলার । ব্রাজিল , ইংল্যান্ডের  অনেকেই খেলে যাচ্ছে । কিন্তু সেসব নিয়ে প্রচারণা কই ? ক’জন মানুষ জানে এসব খবর ?  

ক্রিকেট, আমরা খেলিও ভাল কিন্তু ফুটবলই আমাদের প্রাণ

আবার ক্রিকেট প্রসঙ্গে ফিরে আসি । ভারতের কথাই ধরা যাক । ভারত ক্রিকেটে নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করে ফেলেছে । তাদের ক্রিকেট থেকে  পাওয়ার বাকী কিছু নেই ।  এখন তারাও  ফের মেতেছে ফুটবল নিয়ে । আয়োজন করছে ফ্রেঞ্চাইজি ফুটবল টুর্নামেন্ট । নিয়মিত খেলছে আন্তর্জাতিক প্রীতি  ম্যাচ ।  আয়োজন করছে বয়সভিত্তিক নারী-পুরুষ ফুটবলের বিশ্বকাপ । বর্তমানে ভারতের ফুটবল দল এশিয়ান লেভেলে খেলছে । কিন্তু তাদের মুল লক্ষ্য আসলে বিশ্বকাপ । বিশেষ করে ২০২৬ সাল থেকে বিশ্বকাপে ৪৮টি দেশ অংশ নিচ্ছে । যার সুযোগ নিতে মরিয়া ভারত ।

বিশ্ব র‍্যাংকিংয়ে ভারত এখন ১০৬ নাম্বারে । আর এশিয়ায় ১৯তম । বিশ্বকাপে দলের সংখ্যা বাড়লেও পরবর্তী আসরেই ভারতের এশিয়া থেকে খেলা কঠিন । কিন্তু ভারত উঠে আসছে সন্দেহ নেই । সেটা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় । ফুটবলকে ভারত সরকার এখন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছে । কারণ ভারত বুঝে গেছে , ক্রিকেট দিয়ে আর যাই হোক  খেলাধুলায় বিশ্বস্বীকৃতি পাওয়া যাবে না । আঞ্চলিক একটি খেলার শক্তি হয়েই থাকতে হবে । সেই ভাবনা থেকেই ভারত বিশ্বকাপে জায়গা পেতে  সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । হয়ত একদিন সফলও  হবে । সেটা ২০২৬ সালে না হোক , ২০৩০ কিংবা ২০৩৪ সালে ।

বাংলাদেশকেও ফুটবল নিয়ে সিরিয়াস হতে  হবে । ক্রিকেট আর ক্রিকেটারদের প্রতি পূর্ণ  শ্রদ্ধা রেখেই বলছি , এই দেশে এখনও  জনমানুষের খেলা ফুটবল । তা না হলে কিছুদিন আগে বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে বাংলাদেশের উন্মাদনা আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের শিরোনাম হত না । বাংলাদেশের ফুটবল ভক্তদের  ব্রাজিল-আর্জেন্টিনা প্রীতির খবর  ফলাও করে এসেছে আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় । অথচ ফুটবল বিশ্বকাপের কয়েকটা দিন আগেই অনুষ্ঠিত হয়েছিল বিশ্বকাপ ক্রিকেট । টি-টুয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছিল বাংলাদেশও । কিন্তু সেই বিশ্বকাপ নিয়ে কোন উন্মাদনা ছিল খোদ বাংলাদেশীদের মধ্যে । বাংলাদেশের খেলার দিন পতাকা উড়িয়ে আর জার্সি পড়ে কেউ মিছিল করেনি ।

ফুটবলের প্রতি বাংলাদেশীদের এই প্রাণের টান বুঝতে হবে দেশের সরকার থেকে শুরু করে মিডিয়াকে । ফুটবল ব্যর্থতার দায়  শুধু ফেডারেশন  বা একজন কাজী সালাউদ্দিনের উপর চাপিয়ে লাভ নেই । এই দায় আছে সরকারের ।  সংশ্লিষ্ট সকলের । ক্রিকেটের সাফল্যে ক্রিকেটাররা নগদ  অর্থ ,  ফ্ল্যাট উপহার পেয়েছেন , শোনা যায় । কিন্তু সাফ জয় করে আসা অতীতের ফুটবলাররা তেমন কিছু পেয়েছেন কিনা জানা নেই । আসলে ফুটবল শুরু থেকেই জনপ্রিয় ছিল  । যে কারণে ফুটবল নিয়ে বাড়তি উচ্ছাস দেখাবার প্রয়োজন মনে করেনি কেউ ।  ফলাফল , দেশীয় ফুটবল থেকে আগ্রহ হারিয়েছে আমাদের নতুন প্রজন্ম ।

এখনও সময় আছে ফুটবলে সোনালী দিন ফিরিয়ে আনার । দরকার হলে ফুটবলের জন্য আলাদা মন্ত্রণালয় করা হোক । যাদের   ধ্যানজ্ঞানে থাকবে শুধু ফুটবল । নিয়মিত আন্তর্জাতিক ম্যাচের আয়োজন ,  শিশু থেকে শুরু করে বয়সভিত্তিক একাডেমী  গড়ে তোলা , ফ্রেঞ্চাইজিদের দিয়ে জমজমাট ফুটবল আসর করা , স্টেডিয়ামের উন্নয়ন , জেলা পর্যায়ে নিয়মিত লীগ চালুসহ এই সমস্ত কাজ সরাসরি সরকারী সহায়তা আর দেখভাল ছাড়া সম্ভব না । এমনকি মোহামেডানসহ জনপ্রিয় দলগুলো যারা পিছিয়ে পড়েছে  পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে , তাদের জন্য সরকারী অনুদানের ব্যবস্থা করা উচিৎ ।  এতে আজ আন্তর্জাতিক ফুটবলে বুঁদ  হয়ে থাকা বর্তমান প্রজন্ম ছুটবে ঘরোয়া ফুটবল দেখতে ।

কাতার বিশ্বকাপ আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে গেছে ফুটবল আর ক্রিকেটের পার্থক্য । এই দেশের মানুষের প্রাণের খেলা কোনটা – সেটাও পরিস্কার হয়ে গেছে । তাই এখন  সরকারকে  ঠিক করতে হবে , ফুটবল নাকি ক্রিকেট কে ১ নং অগ্রাধিকার দেবে বাংলাদেশ ?   ফুটবল অগ্রাধিকার দেয়া মানে ক্রিকেট থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া নয় । বরং ক্রিকেটের মতোই ফুটবলকেও সমান সুযোগ সুবিধা দেয়া উচিৎ বলেই আমি মনে করি ।  তাতে দেশীয়  ফুটবল আবার মাথা তুলে  দাঁড়াবে ।

শেখ কামাল, সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ফুটবল সংগঠক

ফুটবল আমাদের আবেগ। বঙ্গবন্ধু তনয় শেখ কামাল বেঁচে থাকলে এতদিনে এশিয়া হয়ে বিশ্বফুটবলেও বাংলাদেশ জায়গা করে নিত। এই একটা মাত্র ইস্যুতে খুব সম্ভবত বিশ্বসেরা রাষ্ট্রনায়ক ও হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি নারী শেখ হাসিনা তাঁর ভাইকে মিস করেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু নিজেও ফুটবল খেলতেন। রাজনৈতিক ব্যস্ততায় তথা দেশের মানুষের জন্য ফুটবলার হয়ে তিনি বিচরণ করতে পারেন নি। তবে তাঁর দুই পুত্র শেখ কামাল ও শেখ জামাল ছিলেন ক্রীড়াঙ্গনের আজন্ম সত্তা। শেখ কামালের সংগঠক হয়ে ওঠার আলেখ্য ধারাভাষ্যে রুপ নিলেও একটি উপন্যাস রচনা করা যায়। ওই লোক টাকে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য দরকার ছিল। বিশেষত ফুটবলের জন্য। বিশ্বকাপ ফুটবলের আসরে যখন খেলা হওয়ার আগে দেশগুলোর জাতীয় সঙ্গীত বাজে, তখন আমার নিজের ইচ্ছে করে সোনার বাংলা গাইতে। আমাদের প্রাণপ্রিয় নেত্রী মনে হয় সবচেয়ে খুশী হতেন, এমন উদাহরণ সৃষ্টি হলে। ফুটবল ফেডারেশনের দায়িত্ব একদিন কাজী সালাহউদীন পাওয়াতে খুব খুশী হয়েছিলেন শেখ হাসিনা। ভেবেছিলেন, এবার সম্ভব ! সম্ভব হয়নি। যদিও আজকের বাংলাদেশে আমাদের মেয়েরা মাতাচ্ছে। নেত্রী নিজেও অনুপ্রেরণা দিচ্ছেন। শেখ হাসিনার জন্য হলেও ফুটবলে আমাদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করতে হবে। রাষ্ট্র, সরকার, ফেডারেশন, দর্শক, অবকাঠামো—-ইতিবাচক দৃষ্টান্তে ভর করে ফুটবলের একটি স্বর্ণ সময়কে আলিঙ্গন করুক। আমরা সবাই কর্মী হয়ে সেই বিপ্লবের অংশ হয়েও থাকতে চাই।

লেখকঃ সভাপতিমন্ডলির সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।