Download WordPress Themes, Happy Birthday Wishes

শ্রীলঙ্কার ইতিহাস গড়ায় বাংলাদেশের মদদ !

ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ১৮৩ রান তুলেছিল বাংলাদেশ । দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে যা অনেক বড় সংগ্রহ । এত বড় টার্গেট তাড়ায় আমিরাতের এই স্টেডিয়ামে জয়ের পূর্ব কোন রেকর্ড নেই । তাই স্বাভাবিকভাবেই আশায় বুক বেঁধেছিল বাংলাদেশের মানুষ । উড়িয়েছিল সুপার-ফোরে খেলার স্বপ্নের মানুষ । কিন্তু ম্যাচ শেষে সেই ফানুস চুপসে গেছে । রেকর্ড গড়েই বাংলাদেশকে বিদায় করেছে শ্রীলঙ্কা ।

বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) চলমান এশিয়া কাপের রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে বাংলাদেশকে ২ উইকেটে হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা । তাতে ‘বি’ গ্রুপ থেকে আফগানিস্তানের সাথে সুপার-ফোর পর্বে নাম লিখিয়েছে দানুশ শানাকার দল । সেই সাথে শানাকা প্রমাণ করেছেন , বাংলাদেশ আসলেই আফগানিস্তানের চেয়ে সহজ প্রতিপক্ষ । তাই আফগানিস্তানের কাছে হারলেও বাংলাদেশকে ঠিকই হারিয়েছে শ্রীলঙ্কা ।

অথচ ম্যাচের শুরুটা বাংলাদেশের পক্ষেই ছিল । জয়ের নেশায় বাংলাদেশের বদলে যাওয়া ওপেনিং জুটিতে দেখা যায় সাব্বির রহমান আর মেহেদি হাসান মিরাজকে । সাব্বির ব্যর্থ হলেও মেহেদি করেছেন ২৬ বলে দুইটি করে চার-ছক্কায় ৩৮ রান । এছাড়া ২২ বলে চারটি চার আর দুই ছক্কায় ৩৯ রান করেছেন সময়ের সবচেতে ধারাবাহিক আফিফ হোসেন ধ্রুব । সমান ২২ বলে ২৪ আর ২৭ রান করেছেন সাকিব আল হাসান এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ । শেষের দিকে মাত্র নয় বলে চারটি চারে অপরাজিত ২৪ রানের ইনিংস খেলেছনে মোসাদ্দেক হোসেন ।

তাতে নির্ধারিত ২০ ওভারে শেষে বাংলাদেশের স্কোরবোর্ডে জমা হওয়া ৭ উইকেটে ১৮৩ রান জয়ের জন্য যথেষ্ট মনে হওয়াই স্বাভাবিক । কারণ দুবাইয়ের এই স্টেডিয়ামে ২০১৬ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাতের ১৭৯ রান তাড়ায় আফগানিস্তানের ৫ উইকেটের জয় ছিল মাঠের রেকর্ড। তাই বাংলাদেশের জয়ের পক্ষে বাজী ধরাটাই ছিল স্বাভাবিক ।

কিন্তু বাংলাদেশ তো আবার নিজেদের বাড়া ভাতে নিজেরাই ছাই দিতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে । তাইতো ম্যাচে বাংলাদেশ ৮ ওয়াইড ও ৪ নো বল । অর্থাৎ পুরো দুই ওভার অতিরিক্ত খেলতে দিয়েছে শ্রীলঙ্কাকে । যেখানে পুরো ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বোলাররা একটি নো কিংবা ওয়াইড দেয় নি !

তিন উইকেট নিয়ে অভিষেকে বাংলাদেশের সেরা বোলার হতে পারতেন ইবাদত হোসেন । কিন্তু তিনি শেষ পর্যন্ত দিয়েছেন ৫১ রান । ওয়াইড ৮টি, নো ২টি।

সবচেয়ে অবাক করা শেখ মেহেদির দুইটি নো বল । স্পিনাররা নো-বল করেন , এটাও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দেখতে হয়েছে । যাকে খোদ বাংলাদেশের অধিনায়ক সাকিব বলেছেন ‘ক্রাইম’ ।

এছাড়া বাংলাদেশকে ধ্বংস করা কুশল মেন্ডিস (৩৭ বলে চারটি চার আর তিন ছক্কায় ৬০) জীবন পেয়েছেন চারবার । উইকেটের পেছনে মুশফিক ক্যাচ নিতে পারলে ২ রানেই ফিরে যান কুশল । কিন্তু সেটা পারেন নি মুশফিক । মেহেদীর বলে উইকেটের পেছনে ডানহাতি ব্যাটসম্যান ক্যা দিয়েও বেঁচে যান। ২৯ রানে তাকে বাঁচিয়ে দেয় মেহেদীর নো বল।

৩১ রানে ইবাদতের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন মেন্ডিস। বাংলাদেশের আবেদন আম্পায়ার নাকচ করে দিলেও রিভিউ নেননি সাকিব। সাকিবের রিভিউ না নেওয়ার কারণ, মুশফিক ও ইবাদত কানে কিছু শুনতে পারেননি এবং তারা আত্মবিশ্বাসীও ছিলেন না। আবার ৪৪ রানে স্টাম্পের খুব কাছ থেকেও তাকে রান আউট করতে পারেননি সাব্বির।

মুশফিকের কথা যত কম বলা যায় , তত ভাল । তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার , সন্দেহ নেই । কিন্তু তার সময় ফুরিয়ে এসেছে । শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও ৫ বলে ৪ রানে আউট হয়েছেন । আফগানিস্তানের বিপক্ষে করেছিলেন ১ রান ।

তবে শুধু একা মুশফিককে দোষ দিয়ে লাভ নেই । বাংলাদেশের পুরো দলের আত্মবিশ্বাস আসলে তলানিতে । ভাল খেলতে খেলতে খেই হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশের মজ্জাগত হয়ে দাঁড়িয়েছে । আফগানিস্তানের বিপক্ষে ১৫ ওভার পর্যন্ত জয়ের অবস্থায় ছিল । কিন্তু এরপরেই ম্যাচ ছুটে যায় বাংলাদেশের হাত থেকে । বোলারদের উল্টাপাল্টা বোলিং বাংলাদেশকে ছিটকে দেয় ম্যাচ থেকে । শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও হয়েছে একই দশা । বারবার বাংলাদেশ হারছে নিজেদের ভুলেই । যাতে মদদ পাচ্ছে বিপক্ষ দল ।

আহাস/ক্রী/০০১