
ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ
বাংলাদেশের ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় তারকা সাকিব আল হাসান । আবার বিতর্ক সৃষ্টিতেও তার ধারেকাছে নেই আর কেউ । কখনও ক্রিকেট জুয়ারিদের সাথে সম্পর্কের কথা গোপন করে নিষিদ্ধ হয়েছেন আইসিসি কর্তৃক । আবার কখনও ঘরোয়া ক্রিকেটে অসদাচরণের দায়ে হয়েছেন বহিষ্কৃত । এছাড়া আরও অনেক অভিযোগ নানা সময়েই উঠেছে সাকিবের বিরুদ্ধে ।
ক্রিকেটের বাইরে সাকিব একজন ব্যবসায়ী হিসেবেও প্রতিষ্ঠিত । ব্যবসায়ী হিসেবে তার হাতেখড়ি রেস্টুরেন্ট ব্যবসায় বিনিয়োগের মাধ্যমে। এরপর দ্রুত নিজের ব্যবসার বিস্তৃতি ঘটিয়েছেন তিনি। শেয়ারবাজার, স্বর্ণ আমদানি ও বিপণন, বিদ্যুৎকেন্দ্র, প্রসাধনী, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, ট্রাভেল এজেন্সি, হোটেল, কাঁকড়া ও কুঁচের খামারসহ বিভিন্ন ব্যবসায় বিনিয়োগ রয়েছে তার। এছাড়া দেশের বাইরে যুক্তরাষ্ট্র, সৌদি আরবসহ বিভিন্ন দেশে বড় অংকের বিনিয়োগ করেছেন তিনি। সর্বশেষ বিনিয়োগ করেছেন ব্যাংকিং সেক্টরে ।
কিন্তু ব্যবসার ক্ষেত্রেও সাকিব ক্রমশ হয়ে উঠছেন রহস্যজনক ব্যক্তিত্ব । কয়েক বছর আগে ইভেন্ট ম্যানেজম্যান্ট কোম্পানি ফিয়েস্তা ইভেন্টম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের নাম ভাঙিয়ে জাপানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের নামে আদম পাচারের অভিযোগ ওঠে । যা নিয়ে বেসরকারী একটি টেলিভিশন চ্যানেলে সংবাদ পরিবেশিত হয় । এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ছিলেন সাকিব ।
সাকিব পরে জানিয়েছিলেন , তিনি এই বিষয়ে কিছুই জানেন না । তার নাম ভাঙ্গিয়ে অপকর্মের চেষ্টা করেছিল ফিয়েস্তা । যা অভিযোগ ওঠার পর ভেস্তে যায় ।
সম্প্রতি সাকিবের নাম উঠে এসেছে পুঁজিবাজার কেলেংকারিতে এসেছে মোনার্ক হোল্ডিংসের নাম । এই প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যানও সাকিব । এমনকি অভিযোগ উঠেছে , শেয়ার ব্যবসার জন্য নিজের বাবার নাম ব বদলে ফেলেছেন সাকিব ! জানা গেছে , মোনার্ক হোল্ডিংস লিমিটেডের লাইসেন্স নেওয়ার সময় সাকিব তার বাবার আসল নাম ব্যবহার করেন নি !
দেশের একটি জাতীয় ইংরেজি দৈনিকে আজ রোববার এমন খবর প্রকাশিত হয়েছে। তাদের কাছে এর প্রমাণও আছে। মোনার্ক হোল্ডিংসের কাগজপত্রে সাকিবের বাবার নাম লেখা রয়েছে কাজী আবদুল লতিফ। যদিও বাংলাদেশের টেস্ট, টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের বাবার নাম খন্দকার মাশরুর রেজা। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেটার হিসেবে এই অলরাউন্ডারের বাবাও দেশের মানুষের কাছে পরিচিত।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান প্রফেসর শিবলি রুবায়েত উল ইসলাম অবশ্য সাকিবের বিরুদ্ধে এই নাম জালিয়াতির অভিযোগ খতিয়ে দেখার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র ব্যবহার করা হয় বলে এখানে নামের ভুল হওয়ার সুযোগ নেই।
শিবলি রুবায়েত উল ইসলাম বলেন, ‘বাবার ভুল নাম ব্যবহারের কোনো সুযোগ নেই, কারণ ভেরিফিকেশন জাতীয় পরিচয়পত্রের মাধ্যমেই হয়। দয়া করে তার ক্ষতি করবেন না। সে (সাকিব) আমাদের গুডউইল অ্যাম্বাসেডর।’
যদিও দৈনিকটি সাকিবের বাবা মাশরুর রেজার সঙ্গে যোগাযোগ করে নিশ্চিত হয়েছেন এনআইডি কার্ডে এমন কোনো ভুল নেই। কোথাও নিজের নাম কাজী আবদুল লতিফ হিসেবেও ব্যবহার করেননি সাকিবের বাবা মাশরুর রেজা।
ঘটনা প্রকাশের পর সাকিব জানিয়েছেন , ‘যদি এখানে কোনো ভুল হয়ে থাকে, তাহলে কোম্পানি সেটা ঠিক করে নেবে।’
এদিকে পুঁজিবাজারে সাকিবের বিতর্কের বিষয়কে সম্পূর্ণ বাইরের ব্যাপার বলছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরী সুজন বলেছেন, ‘এটা সম্পূর্ণ বাইরের ব্যাপার। যাকে (সাকিব) নিয়ে আপনারা বলছেন তিনি নিজেও এখন দেশের বাইরে আছেন আমি যতটুকু জানি। এ বিষয়গুলো তো আমাদের কাছে সেভাবে আসে না। আপনারা যেভাবে শুনেছেন, আমরাও সেভাবে শুনেছি। এই বিষয় নিয়ে তাই এই মুহূর্তে আমার পক্ষে বলা সম্ভব না। ’
আহাস/ক্রী/০০৬