Download WordPress Themes, Happy Birthday Wishes

ঝলমলে সমাপনির পর নিস্তব্ধ বার্মিংহ্যাম

আহসান হাবীব সুমন/ক্রীড়ালোকঃ

পর্দা নেমেছে ২২তম কমনওয়েলথ গেমসের । ইংল্যান্ডের বার্মিংহ্যাম শহরে সোমবার (৮ আগস্ট) আলোক ঝলমলে অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সমাপনি ঘটেছে গেমসের ।আরও একবার কমনওয়েলথ গেমসে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে অস্ট্রেলিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব । তবে কম যায় নি স্বাগতিক ইংলিশরাও । রেকর্ড পদক জিতে দ্বিতীয় হওয়া ইংল্যান্ড কঠিন চ্যালেঞ্জ ছুঁড়েছে অস্ট্রেলিয়াকে ।

২২তম কমনওয়েলথ গেমসের পর্দা উঠেছিল ২৮ জুলাই । উদ্বোধনের মতই অ্যালেক্সান্ডার স্টেডিয়ামে সমাপনি অনুষ্ঠানে ছিল জমকালো আয়োজন । বার্মিংহ্যাম তথা ইংল্যান্ডের মাল্টি কালচারাল বৈশিষ্ট্যের স্বরূপ ফুটে উঠেছে গেমসের সমাপনি আয়োজনে । যেখানে দর্শকদের মুগ্ধ করেছে ডেক্সি মিডনাইট রানার , আপাচে ইন্ডিয়ান , মিউইজিক্যাল ইয়ুথ আর ইউবি-ফোরটি’র মত ব্যান্ডের সঙ্গীত । এমনকি ছিল ভারতের পাঞ্জাবী ভাংড়া নাচের দুর্দান্ত পরিবেশনা । এছাড়া সঙ্গীত মূর্ছনায় দর্শক মাতিয়েছেন জর্জা স্মিথ ।

তবে গ্যালারিতে উপস্থিত দর্শকদের জন্য চমক ছিলেন ওজি অসবার্ন । ৭০ দশকের শুরু থেকে সারাবিশ্বের ‘রক-সং’ প্রেমীদের কাছে তুমুল জনপ্রিয় নাম অসবার্ন । তার ‘ব্ল্যাক-সাবাথ’ ব্যান্ড এখনও হার্ড রক ঘরানায় বিশ্বসেরাদের তালিকায় । যদিও ৭৪ বছর বয়সী বার্মিংহ্যামের এই রকস্টার স্বাস্থ্যগত কারণে অনেকদিন হয়ে গেছে মঞ্চ মাতান না । কিন্তু কমনওয়েলথ গেমসের সমাপনি অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে গ্যালারির তিন লাখ দর্শককে চমকে দিয়েছেন তিনি । তার বিখ্যাত ‘প্যানারয়েড’ গানের তালে মঞ্চে হাঁটেন । চিৎকার করে বার্মিংহ্যামকে ধন্যবাদ জানান ।

কমনওয়েলথ গেমস ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট ডেম লুইস মার্টিন সমাপনি ভাষণ দিয়েছেন । অনুষ্ঠানের শেষভাগে পরবর্তী আয়োজক অস্ট্রেলিয়ার ভিক্টোরিয়ার মেয়রের হাতে তুলে দেয়া হয় কমনওয়েলথ পতাকা ।

সমাপনী অনুষ্ঠানের শুরুর দিকে ছিল অংশ নেয়া দেশগুলোর মার্চপাস্ট । যেখানে শুরুতেই স্টেডিয়ামে প্রবেশ করেছে স্বাগতিক ইংল্যান্ড । বাংলাদেশের পতাকা বহন করেছেন হাইজাম্পার মাহফুজুর রহমান । মার্চপাস্টে ছিল বাংলাদেশের কুস্তি, বক্সিং ও অ্যাথলেটিক্স দল । দলের অন্য ডিসিপ্লিনের সদস্যদের কেউ ফিরে গেছেন ঢাকায় কেউবা তুরস্কের কোনিয়ায়। ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে অংশে নেওয়ার জন্য।

বাংলাদেশের জন্য ২২তম কমনওয়েলথ গেমস ছিল হতাশার । ফেভারিট ইভেন্ট শ্যুটিং আর আর্চারি না থাকায় বাংলাদেশের ভরাডুবি ঘটেছে গেমসে । অ্যাথলেটিক্স, বক্সিং, সাঁতার, ভারোত্তোলন, জিমন্যাস্টিকস, টেবিল টেনিস ও কুস্তিতে অংশ নিয়ে কোনো পদক জিততে পারেননি দেশের ক্রীড়াবিদরা। তবে বাংলাদেশের টেবিল টেনিস দল আশা জাগিয়েছিল। কিন্তু সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে তারা ভারতের কাছে হেরে যায়।

৭২ দেশের পাঁচ হাজারের বেশী প্রতিযোগী লড়াই করেছে পদকের জন্য । যদিও গেমসের মুল লক্ষ্য ‘পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির সেতুবন্ধ তৈরি’ , কিন্তু পদক লড়াইয়ের ক্ষেত্রে সবাই চেষ্টা করেছেন প্রতিপক্ষের প্রতি বিন্দুমাত্র বন্ধুত্ব না দেখাতে । আসরে পদক তালিকার শীর্ষস্থান বজায় রেখেছে অস্ট্রেলিয়া। যদিও গোল্ডকোস্টে পাওয়া ৮০টি স্বর্ণপদক ধরে রাখতে পারেনি শীর্ষদলটি। ৬৬টি স্বর্ণ। ছেলেদের ২১ স্বর্ণের বিপরীতে অস্ট্রেলিয়ার মেয়েরা জিতেছে ডাবল (৪৩টি) স্বর্ণ। ৫৭ রুপা ও ৫৪ ব্রোঞ্জ নিয়ে অসিদের দখলে ১৭৭ পদক। স্বাগতিকরা শীর্ষস্থান দখলের জন্য দারুণ লড়াই করেছিল। নিজেদের মাঠে পদক সংখ্যা বাড়াতে পেরেছে ইংল্যান্ড। গত আসরে তাদের অর্জন ছিল ৪৫টি স্বর্ণ। এবার ৫৬টি স্বর্ণের সঙ্গে ৬৪ রুপা ও ৫৩ ব্রোঞ্জ নিয়ে ইংল্যান্ডের অর্জন ১৭৩ পদক। ভারতকে হটিয়ে (২২ স্বর্ণ) কানাডা উঠে এসেছে তৃতীয় (২৬ স্বর্ণ) স্থানে।

আহাস/ক্রী/০০৩