Download WordPress Themes, Happy Birthday Wishes

সারাদেশে ক্রিকেট ছড়িয়ে দিতে ‘আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা’

ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ

অবশেষে সারাদেশে ক্রিকেটকে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) গঠন করতে চলেছে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা । টেস্ট ক্রিকেট স্ট্যাটাস পাওয়ার ২২ পর যে উদ্যোগ নিতে চলেছে বিসিবি । যদিও ২০১৩ সালে সরকারি মনোনয়নে প্রথমবার বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পরেই নাজমুল হাসান পাপন বলেছিলেন আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার কথা । প্রথম দুই মেয়াদে না হলেও তৃতীয় মেয়াদে এসে আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা বাস্তবায়নের কাজে হাত দিয়েছে পাপনের নেতৃত্বাধীন বোর্ড।

মঙ্গলবার (১৯ জুলাই) ঢাকার একটি অভিজাত হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়েছে বিসিবি’র বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) । সেখানেই ‘আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা’ গঠনসহ এসেছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত । যেমন- নিজেদের গঠনতন্ত্রে একটি সংশোধনী এনে ৭৬টি ক্লাবকে সমতায় নিয়ে এসেছে বিসিবি। এখন থেকে ক্রিকেট কমিটি অব ঢাকা মেট্রো পলিস বা সিসিডিএমের আওতাধীন বিভিন্ন টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া ক্লাবগুলোর কাউন্সিলরশিপ থাকবে সমান । যেখানে , আগে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লীগে খেলা শীর্ষ ছয়টি ক্লাব পেত দুইজন করে কাউন্সিলর । এছাড়া বাকী সবাই পেত একজন করে কাউন্সিলর । এদের মধ্যে প্রথম বিভাগের ২০টি দল অন্তর্ভুক্ত ছিল । আবার দ্বিতীয় বিভাগের সেরা ১২টি ক্লাব , তৃতীয় বিভাগের সুপার লীগে খেলা আটটি ক্লাব পেতো একজন করে কাউন্সিলর ।

অর্থাৎ ২০১৩ সালের সংশোধিত গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, বিভিন্ন স্তরে খেলা ৭৬ ক্লাবের কাউন্সিলর সংখ্যা ছিল ৫৮টি । কিন্তু নতুন সিদ্ধান্তে প্রত্যেক ক্লাব কাউন্সিলরশিপ পাওয়ায় এখন কাউন্সিলরের সংখ্যা সমান ৭৬টি ।

এই নিয়ে পাপন জানান , এখন ঢাকা লীগে অনেক দলই শিরোপার জন্য লড়াই করে । এখন আর ক্রিকেট লীগ মোহামেডান কিংবা আবাহনী কেন্দ্রিক নয় । যে কারণে প্রত্যেক ক্লাবের সমতায় আসা জরুরী । ক্রিকেটের অন্যান্য বিভাগেও প্রতিটা ক্লাবের গুরুত্ব বাড়াতে নেয়া হয়েছে এমন সিদ্ধান্ত ।

সভায় আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থা গঠনের অনুমোদন দেয়া হয়েছে । এই সংস্থা গঠনের ফলে এখন আর ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ ঢাকা-কেন্দ্রিক হবে না । বরং বিভাগকেন্দ্রিক কার্যক্রমের মাধ্যমে তৃণমূলে ছড়িয়ে দেয়া হবে ক্রিকেট । এই জন্য দেশের আটটি বিভাগ নিয়ে গঠন করা হবে সাতটি আঞ্চলিক সংস্থা । শুধু ময়মনসিংহ বিভাগকে রাখা হবে ঢাকার মধ্যে । তবে আঞ্চলিক ক্রিকেটে ময়মনসিংহের জন্য আলাদা দল রাখা হতে পারে । এছাড়া এসব আঞ্চলিক ক্রিকেট সংস্থার কমিটি হবে দুই ধরনের; বড় বিভাগ যেগুলোতে জেলার সংখ্যা বেশি সেগুলোতে ১৭ জন সদস্য আর যেগুলোতে জেলার সংখ্যা কম সেগুলোতে কমিটির সদস্য থাকবে ১১ জন। সার্বিকভাবে দিকনির্দেশনা বিসিবিই দেবে বলে জানিয়েছেন পাপন।

বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেট লীগে আম্পায়ারিং নিয়ে আছে বিস্তর অভিযোগ । যদিও বিসিবি সভাপতি সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন । বলেছেন , সর্বশেষ ঢাকা প্রিমিয়ার লীগে আম্পায়ারিং নিয়ে কোন সমস্যা হয় নি । হলেও তার জানা নেই । এই নিয়ে কারো কোন অভিযোগ থাকলে তিনি তার ভিডিও প্রমাণ হিসেবে পেশ করতে বলেন । প্রমাণ পেলে কমিটি ব্যবস্থা নেবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন পাপন ।

পাপন জানান , প্রথম বিভাগ, দ্বিতীয় বিভাগ ও তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেটের আম্পায়ারিং নিয়ে বেশী অভিযোগ ছিল । তবে এখন বিসিবি সব বিভাগের ম্যাচ রেকর্ডিংয়ের ব্যবস্থা রেখেছে । সেগুলো নিয়মিত খতিয়ে দেখে কোন সমস্যা পাওয়া যায় নি । এখন আর অভিযোগও আসছে না !

পাপন চ্যালেঞ্জ করে বলেন , অভিযোগ থাকলে নির্দিষ্ট করে বলতে হবে । আমরা সবার সামনে সেই খেলার ভিডিও ফুটেজ দেখে ব্যবস্থা নেব ।

এদিকে আগামী চার বছরে বাংলাদেশের জন্য ম্যাচের সংখ্যা বাড়িয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থা ‘আইসিসি’ । জানা গেছে , আগামী চার বছরের চক্রে বাংলাদেশ পাচ্ছে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক ম্যাচ। যদিও এই বিষয়ে আইসিসি’র আনুষ্ঠানিক সুচি ঘোষণা আসবে আরও কিছুদিন পর । এই নিয়ে পাপন জানান , আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের পারফর্মেন্স ক্রমাগত উন্নতির দিকে বলে এফটিপিতে বেড়েছে টাইগারদের ম্যাচ-সংখ্যা ।

উল্লেখ্য , ২০২৩ থেকে ২০২৭ পর্যন্ত এ চক্রে তিন ফরম্যাট মিলে মোট ১৪৪টি আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। এর চেয়ে বেশি ম্যাচ রয়েছে শুধুমাত্র ওয়েস্ট ইন্ডিজের, ১৪৬টি। এছাড়া এ চক্রে সর্বোচ্চ ৫৯টি ওয়ানডে ম্যাচ খেলবে টাইগাররা। টেস্ট রয়েছে ৩৪টি ও টি-টোয়েন্টি ৫১টি।

আহাস/ক্রী/০০২