Download WordPress Themes, Happy Birthday Wishes

সাতটি ব্যালনের মালিক পেলে !

ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ

বর্তমান সময়ে ‘ব্যালন ডি অর’ পুরস্কার যে কোন ফুটবলারের আরাধ্য । এই পুরস্কারের মাধ্যমে স্বীকৃতি দেয়া হয় বিশ্বসেরা ফুটবলারকে । যা পাওয়ার স্বপ্ন দেখে না এমন কোন ফুটবলার সম্ভবত খুঁজে পাওয়া যাবে না ।

ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকীর জনপ্রিয় ‘ব্যালন ডি অর’ পুরস্কার দেয়া হচ্ছে ১৯৫৬ সাল থেকে । এখন পর্যন্ত সর্বাধিক সাতবার ব্যালন জিতেছেন আর্জেন্টিনার লিওনেল মেসি । পাঁচবার ব্যালন জিতেছেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো । এছাড়া তিনবার করে ফ্রান্স ফুটবল ম্যাগাজিনের পুরস্কারটি জিতেছেন ইউহান ক্রুয়েফ , মিশেল প্লাতিনি আর মার্কো ভ্যান বাস্তেন । তবে পেলে কিংবা দিয়াগো ম্যারাডোনার মত সর্বকালের সেরা ফুটবলার নেই ব্যালন বিজয়ীদের তালিকায়। কিন্তু কেন ?

আসলে ১৯৯৫ সালের আগ পর্যন্ত ব্যালন ডি অর’ দেয়া হত শুধু ইউরোপিয়ান ফুটবলারদের । ব্রাজিলের ‘কালো মানিক’ পেলে সেই সময়ের অনেক আগেই ফুটবল থেকে অবসরে চলে গেছেন । আর ম্যারাডোনা ১৯৯৫ সালের পর ছিলেন না সেরা ফর্মে । ফলে ফুটবলের দুই মহানায়কের কেউই পান নি ব্যালন ডি অর’ ।

সাম্প্রতিক সময়ে মেসি আর রোনালদোর একের পর এক ব্যালন জয়ের পর প্রশ্ন উঠেছে , সর্বকালের সেরা ফুটবলার কে ? অনেকেই শুধু ব্যালনের সংখ্যায় মেসিকে সর্বকালের সেরা হিসেবে স্বীকৃতি দেয়ায় উঠেপড়ে লেগেছে । এই বিতর্কের মধ্যে ২০১৬ সালে ব্যালন কর্তৃপক্ষ তাদের একটি নতুন সিদ্ধান্তের কথা জানায় । ফ্রান্স ম্যাগাজিন জানায় , শুরু থেকে সারা বিশ্বের ফুটবলারদের বিবেচনা করা হলে পেলে পেতেন সাতটি ব্যালন । ১৯৫৮ , ১৯৫৯,১৯৬০.১৯৬১, ১৯৬৩ , ১৯৬৪ আর ১৯৭০ সালের ব্যালন পেলের প্রাপ্য ছিল বলে ঘোষণা দেয় ফ্রান্স ফুটবল সাময়িকী ।

এছাড়া ইউরোপের বাইরে থেকে ব্রাজিলের গারিঞ্চা ১৯৬২ সালে , আর্জেন্টিনার প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক মারিও ক্যাম্পোস ১৯৭৮ , ম্যারাডোনা ১৯৮৬ আর ১৯৯০ এবং ব্রাজিলের বিশ্বকাপজয়ী তারকা রোমারিও ১৯৯৪ সালে ব্যালন পাওয়ার দাবীদার ছিলেন ।

এমনকি , পেলের সাতটি ব্যালন নিয়ে ‘ফ্রান্স ফুটবল’ একটি বিশেষ সংখ্যাও বের করেছিল । যেখানে পেলেসহ অন্য যারা ব্যালনের জন্য যোগ্য ছিলেন তাদের নাম প্রকাশ করা হয় এবং তাদের ঘোষণা করা হয় ‘আলটিমেট উইনার’ হিসেবে ।

পেলে ব্রাজিলের হয়ে ১৯৫৮,১৯৬২ আর ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপ জিতেছেন । যদিও ১৯৬২ সালের বিশ্বকাপে তিনি একটির বেশী পুরো ম্যাচ খেলতে পারেন নি । চেকস্লোভাকিয়ার বিপক্ষে দ্বিতীয় ম্যাচে ইনজুরিতে পড়ে বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যায় তার । পরবর্তীতে গারিঞ্চার কৃতিত্বে চিলিতে অনুষ্ঠিত সেই বিশ্বকাপ জিতে নেয় ব্রাজিল । তবে ১৯৫৮ আর ১৯৭০ সালের বিশ্বকাপে পেলে ছিলেন অনন্য । ব্রাজিলের প্রথম বিশ্বকাপ জয়ের পথে আসরের সেরা উদীয়মান তারকার পুরস্কার পেয়েছিলেন পেলে । এছাড়া ১৯৭০ বিশ্বকাপে পেয়েছিলেন সেরা খেলোয়াড়ের গোল্ডেন-বল । নিজের প্রথম বিশ্বকাপে একাধিক রেকর্ড গড়েন পেলে । বিশ্বকাপে সবচেয়ে কম বয়সে গোল , সেমি ফাইনালে সবচেয়ে কম বয়সে হ্যাট্রিক আর ফাইনালে সবচেয়ে কম বয়সে জোড়া গোলের মালিক বনে যান তিনি , যেসব রেকর্ড এখনও কেউ ভাঙ্গতে পারে নি ।

দেশের হয়ে ৯২ ম্যাচে ৭৭ গোল করেছেন পেলে । আর ক্লাবের হয়ে তার অফিশিয়াল গোলের সংখ্যা ৬৫৯ ম্যাচে ৬৪৩টি । যদিও পেলে আর তার ক্লাব স্যান্তসের দাবী , পেলের গোলের সংখ্যা হাজারের বেশী । কিন্তু সেখানে আনঅফিশিয়াল ম্যাচের গোল হিসেব করায় তা গণনায় আসে নি ।

পেলে ক্যারিয়ারের বেশীরভাগ সময় কাটিয়েছেন নিজ দেশের ক্লাব স্যান্তসে । খেলেছেন ১৯৫৬-১৯৭৪ সাল পর্যন্ত । ক্যারিয়ারের শেষ সময়টা অর্থাৎ ১৯৭৫-১৯৭৭ পর্যন্ত আমেরিকার মেজর লীগ সকারে খেলেছেন নিউ ইয়ের্ক কসমসের হয়ে ।

পেলে কিংবা ম্যারাডোনা পান নি ফিফা বর্ষসেরা পুরস্কার । কারণ ফিফাও ‘প্লেয়ার অফ দা ইয়ার’ পুরস্কার দিচ্ছে ১৯৯১ সাল থেকে । কিন্তু তাই বলে তাদের সর্বকালের সেরার তালিকা থেকে বাদ দেয়ার কোন সুযোগ আছে কি ?

আহাস/ক্রী/০০৬