Download WordPress Themes, Happy Birthday Wishes

সালাউদ্দিনের তৃপ্তির ঢেকুর !

ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ

টানা তিন হারের মধ্য দিয়ে এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাই পর্ব শেষ করেছে বাংলাদেশ । আর তাতে ফিফা র‍্যাংকিংয়ে বাংলাদেশের অবনতি হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে । বর্তমানে ১৮৬ অবস্থানে থাকা ন বাংলাদেশ চলে যেতে পারে ১৯০ এর ঘরে । কিন্তু তাতেও সমস্যা দেখছেন না বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন । তিনি বরং মনে করছেন বাংলাদেশের ফুটবল উন্নতির পথেই আছে ।

সালাউদ্দিন অবশ্য এমন দাবী করতেই পারেন । কারণ ২০১৭-১৮ সালে বাংলাদেশের র‍্যাংকিং পৌঁছে গিয়েছিল ১৯৭ এ । সেই সময় অবশ্য অনেকদিন বাংলাদেশ কোন আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পায় নি । পরে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরে র‍্যাংকিং অবস্থার খানিকটা উন্নতি ঘটিয়েছে বাংলাদেশ ।

সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত হয়েছে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের ‘ই’ গ্রুপের ম্যাচে । যেখানে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ছিল স্বাগতিক মালয়েশিয়া , তুর্কেমেনিস্তান আর বাহরাইন । তিনটি দেশই বাংলাদেশের চেয়ে ফিফা র‍্যাংকিং আর ফুটবল শক্তিতে অনেক এগিয়ে । এই তিন ম্যাচের কোনটায় জয় পাবে বাংলাদেশ – এমন স্বপ্ন কেউ দেখে নি । বরং বাহরাইন আর তুর্কেমেনিস্তানের কাছে ০-২ আর ১-২ গোলের হারে অনেকেই বাংলাদেশের খেলায় উন্নতি দেখেছেন । তবে শেষ ম্যাচে স্বাগতিক মালয়েশিয়ার কাছে ১-৪ গোলের হার ছিল দৃষ্টিকটু ।

এশিয়ান বাছাইয়ের প্রথম দুই ম্যাচে হেরেই বাংলাদেশের ফিফা র‍্যাংকিং অবনমন নিশ্চিত হয়ে যায় । আর মালয়েশিয়ার কাছে হারে সেই র‍্যাংকিং ১৯২ হতে পারে । যদিও এখনও ফিফা তাদের সর্বশেষ র‍্যাংকিং প্রকাশ করে নি । উয়েফা নেশন্স লীগ , বিশ্বকাপ বাছাই প্লে-অফ আর এশিয়ান বাছাইয়ের চলমান সব খেলা শেষে প্রকাশ হতে পারে পরবর্তী র‍্যাংকিং । সেই ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অবস্থান ১৯০ নাকি তারও পেছনে চলে যায় – এটা এখনও নিশ্চিত না ।

এদিকে এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের তিন ম্যাচে টানা হারের পরেও দলের উন্নতি দেখছেন সালাউদ্দিন । দেশের ফুটবলের পুনর্জাগরণ ও শক্তিশালী জাতীয় দল গঠনের লক্ষ্যে পাঁচ বছর মেয়াদি (২০২২-২০২৩ থেকে ২০২৬-২০২৭ পর্যন্ত) একটি উন্নয়নমূলক প্রকল্প চলমান রয়েছে। সে প্রকল্পের একটি কর্মশালায় এসে বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) জাতীয় ক্রীড়া পরিষদে গণমাধ্যমকে কাজী সালাউদ্দিন বলেন, ‘ফুটবলে সবাই শুধু অতীত অতীত করে, আমি তো জানি তখন আমরা কেমন ম্যাচ খেলেছি, কী রেজাল্ট হয়েছে। তখন এত মিডিয়া ছিল না। তখন ক্রীড়াঙ্গনে ছিল যেটা, ঢাকা স্টেডিয়ামে দর্শক আসার অভ্যাস ছিল, আজ সেই অভ্যাস নেই। তখন কোনো টপ টিমের সঙ্গে খেলিনি। আপনি সেই সময়ে ফেরত যান, আমি দেখিয়ে দেব ৮০-৯০-এর দশকে কতগুলো ম্যাচে আমরা ৮-১০ গোল খেয়েছি, যেটা এখন আর হয় না। ‘

এক সময় বাংলাদেশে ফুটবল ছিল সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা । মোহামেডান কিংবা আবাহনী ম্যাচে দর্শকে উপচে পড়া গ্যালারি ছিল স্বাভাবিক ঘটনা । অথচ এখন তথাকথিত বড় ম্যাচেও গ্যালারিতে দর্শক খুঁজতে হয় অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে । এমন না যে ফুটবলের সোনালি সময়েও বাংলাদেশ অনেক ট্রফি জিতেছে । ফুটবলে বাংলাদেশের সাফল্য বলতে হাতে গোনা কয়েকটি । কিন্তু মোহামেডান আবাহনী ক্রেজ আর সালাউদ্দিন , চুন্নু , মুন্না , কায়সার , সাব্বির , মামুন জোয়ার্দারদের তারকাখ্যাতি গ্যালারিতে কখনও দর্শকের অভাব হতে দেয় নি । এখন ফুটবলে সাফল্য তো বটেই , তারকা খেলোয়াড়েরও অভাব – যার খেলা দেখতে মাঠে যাওয়ার উৎসাহ অনুভব করবে দর্শকরা !

যদিও বর্তমান খেলোয়াড়দের পক্ষ নিয়ে বাফুফে সভাপতি বলেছেন, ‘আগে মোহামেডান-আবাহনী ম্যাচে ৪০-৫০ হাজার দর্শক আসত। আজকে দর্শক আসে না বলে ফুটবলের ঐ নেশাটা নাই। আজকে দর্শকরা টেলিভিশনে বসে টক শোতে থাকে। যারা টক শোতে থাকে তারা কিন্তু খেলা দেখে নাই। যারা খেলা দেখেছে ঐটার সঙ্গে তুলনা করলে বলবে, হ্যাঁ আজকের খেলোয়াড়রা অনেক ভালো। ‘

কাজী সালাউদ্দিন ৭০-৮০-এর দশকে তারকা ফুটবলার ছিলেন । খেলেছেন দেশের বাইরের লিগেও। তাই সে সময়ে দেশের ফুটবল সম্পর্কে তার সবই জানা রয়েছে। আর এখন তিনি দেশের ফুটবলের অভিভাবক। যে কারণে বাফুফে সভাপতি মনে করেন, আশি-নব্বইয়ের দশকের চেয়ে এখনকার ফুটবলাররা অনেক ভালো। বাংলাদেশ দল অন্তত এখন আর ৮-১০ গোল খায় না। এটাই বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য পরম প্রাপ্তি।

সালাউদ্দিন অবশ্য মনে করিয়ে দেন নি , এক সময় মালদ্বীপ আর শ্রীলংকার মত দেশকে বলে কয়ে হারিয়েছে বাংলাদেশ । জয়ের রেকর্ড আছে মালয়েশিয়া , ইন্দোনেশিয়া আর থাইল্যান্ডের বিপক্ষেও ।আজ সেইসব দলের কাছেই বাংলাদেশ মাঠে নামার আগেই হেরে বসে থাকছে !

আহাস/ক্রী/০০৬