
ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ
ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে টেস্ট সিরিজের শুরুটা ভাল হয় নি বাংলাদেশের । অ্যান্টিগায় অনুষ্ঠিত প্রথম টেস্ট টাইগাররা হেরেছে সাত উইকেটের ব্যবধানে । শুক্রবার (২৪ জুন) স্বাগতিকদের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় আর শেষ টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ । ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে সেইন্ট লুসিয়ার ড্যারেন স্যামি স্টেডিয়ামে ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ অল আউট হয়েছে মাত্র ১০৩ রানে । দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ের কিছুটা উন্নতি হলেও টপ অর্ডার ছিল ব্যর্থ । মাহমুদুল হাসান জয় , নাজমুল হোসেন শান্ত আর মুমিনুল হক আর নুরুল হাসান সোহানরা রানের খাতাই খুলতে পারেন নি । দুই ইনিংসেই অল্প রানে আউট হয়েছেন লিটন দাস । তামিম ইকবাল দুই ইনিংসেই ভাল শুরুর আভাস দিয়ে আউট হয়েছেন ত্রিশের আগেই । বাংলাদেশের হয়ে দুই ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন অধিনায়ক সাকিব সাকিব আল হাসান । কিন্তু তার ইনিংস দুইটিও সুযোগ থাকা স্বত্বেও আরও বড় না করতে না পারার দায় এড়াতে পারবে না । দ্বিতীয় ইনিংসে হাফ সেঞ্চুরি করেছেন সোহান ।
দ্বিতীয় টেস্টের আগে দলে যোগ দিয়েছেন এনামুল হক বিজয় আর শরিফুল ইসিলাম । বিজয় ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সবশেষ আসরে ব্যাট হাতে স্বপ্নের মতো সময় কাটিয়েছেন । ক্রিকেট ইতিহাসের প্রথম ব্যাটার হিসেবে ‘লিস্ট এ’ ক্রিকেটের এই টুর্নামেন্টে ১০০০ এর উপর রান করেছেন। এমন পারফর্মেন্সের পুরস্কার হিসেবে আট বছর পর সাদা পোশাকের ক্রিকেটে ডাক পেয়েছেন তিনি । অবশ্য ইয়াসির আলীর রাব্বির ইনজুরিতেই কপাল খুলেছে তার ।
এনামুল বিজয়কে দ্বিতীয় টেস্টের একাদশে দেখা যেতে পারে । কারণ মুমিনুল আর শান্তদের একাদশে সুযোগ পাওয়ার সম্ভাবনা কম । অন্তত শান্তকে বসিয়ে রাখার চিন্তার কথাই বলেছেন সাকিব , ‘ মুমিনুলের সঙ্গে তার ব্যাটিং বিষয়ে আমার প্রায়ই কথা হয়। তার সঙ্গে পরের টেস্ট নিয়ে আবারো কথা বলবো। সে যদি ২য় টেস্ট খেলতে চায় খেলবে আর যদি বিশ্রাম চায় তবে পেতে পারেন। তবে বাকিদের হয় ভালো খেলবে না হয় সরে যেতে হবে।’
তবে মুমিনুল বা শান্ত , যেই বাদ পড়ুক , তাতে বিজয় কিংবা মোসাদ্দেক আসছেন একাদশে । আবার দলের সাথে যোগ দিয়েছেন পেসার শরিফুল । যদিও প্রথম টেস্টে মোস্তাফিজুর রহমান , এবাদত হোসেন আর খালেদ আহমেদ ভাল বল করেছেন । শরিফুল দ্বিতীয় টেস্টের দলে জায়গা পেলে বাদ পড়তে পারেন মোস্তাফিজ কিংবা খালেদ ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে বাংলাদেশ পরাজয় এড়াতে চায় । কারণ এই ম্যাচ হারলেই বাংলাদেশের ভাগ্যে জুটবে শততম টেস্ট হারের লজ্জা । তবে একদিন তো এই রেকর্ড হবেই । কিন্তু সেটা দুই এক ম্যাচ পিছিয়ে গেলে খারাপ হয় না । পরিসংখ্যান বলছে , এ পর্যন্ত ১৩৩ টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তন্মধ্যে জয় মাত্র ১৬টি। পরাজিত হয়েছে ৯৯টি ম্যাচে। বাকী ১৮টি ম্যাচ ড্র হয়েছে। অধিকাংশ ড্র’ই বৃস্টির কল্যানে পেয়েছে বাংলাদেশ।
সেইন্ট লুসিয়ায় হাবিবুল বাশার সুমন, খালেদ মাসুদ পাইলট ও মোহাম্মদ রফিকের একই ম্যাচে সেঞ্চুরি করার রেকর্ড আছে । ২০০৪ সালের সেই ম্যাচটি জয়ের পথে থেকেও বাংলাদেশের ড্র করতে হয়েছে । সেইন্ট লুসিয়ার সেই স্মৃতি আবারও ফেরানো অবশ্য টাইগারদের পক্ষে কঠিন । কারণ দলের টপ অর্ডার একেবারেই ফর্মহীন । কিন্তু তা স্বত্বেও তামিম , সাকিব আর লিটন দাসদের উপর ভরসা রাখা ছাড়া উপায় নেই । মুমিনুলকে খেলালে সেটাও হবে ভরসার কারণে । টেস্টে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান মুমিনুল সর্বশেষ নয় ইনিংসে দুই অংকের রানের দেখা পান নি । সুযোগ পেলে নিজেকে প্রমাণ করা খুব জরুরী তার জন্য । আর অবশ্যই বাংলাদেশের জন্য ।
এ পর্যন্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ১৯টি টেস্ট ম্যাচ খেলেছে বাংলাদেশ। তন্মধ্যে জয় পেয়েছে মাত্র ৪টিতে। হেরেছে ১৩টি ম্যাচে। বাকী দুটি ম্যাচ ড্র হয়েছে।
আহাস/ক্রী/০০৫