Download WordPress Themes, Happy Birthday Wishes

মা’কে বাইরে রেখে মেয়েকে ধর্ষণ !

ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ

ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবলার দিয়াগো ম্যারাডোনা । ফুটবল প্রতিভায় যার তুলনা ইতিহাসেই বিরল । আর্জেন্টিনাকে এককভাবে বিশ্বকাপ জিতিয়ে তিনি সেই দেশের ‘ফুটবল ইশ্বর’ । একটা সময় জাদুকরী নৈপুণ্যে গোটা ফুটবল বিশ্বকে ম্যারাডোনা করেছিলেন আলোকিত । কিন্তু ফুটবলের বাইরে ম্যারাডোনার জীবন আবার ততটাই বিতর্কের অন্ধকারে ঢাকা ।

২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর ম্যারাডোনা পৃথিবী ছেড়েছেন । আর দুইদিন পরেই পালিত হবে এই মহান ফুটবল তারকার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী । কিন্তু এই সময়েই কিনা প্রয়াত ফুটবল ইশ্বরের বিরুদ্ধে উঠেছে ধর্ষণের মত ঘৃণ্য অভিযোগ । আবার সেটাও এনেছেন ম্যারাডোনার এক সময়ের বান্ধবী মাভিস আলভারেজ , অপ্রাপ্তবয়স্ক থাকাকালীন যার সাথে সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন ম্যারাডোনা ।

ম্যারাডোনার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ অবশ্য নতুন কিছু না । মাদকাসক্তি , ধর্ষণ , গোলাগুলি -এমন অভিযোগে ম্যারাডোনা বেঁচে থাকাবস্থায় অভিযুক্ত হয়েছেন । কিন্তু মৃত্যুর পর এই প্রথম গুরুতর অভিযোগ আনা হল ফুটবল কিংবদন্তীর বিপক্ষে ।

আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম ‘ইনফোবে’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাভিস যেন অভিযোগের ডালি নিয়ে বসেছিলেন । মাভিসের অভিযোগগুলোর মধ্যে আছে – অপহরণ, নারী পাচার, ধর্ষণ, ইচ্ছার বিরুদ্ধে কৃত্রিম স্তন প্রতিস্থাপন, শারীরিক নির্যাতন, জোর করে নেশা করানো !

সম্প্রতি মানব পাচারের মামলায় আর্জেন্টিনার বিচার বিভাগের সামনে সাক্ষ্য দিতে ২০ বছর পর যুক্তরাষ্ট্রের মায়ামি থেকে আর্জেন্টিনায় এসেছেন মাভিস আলভারেজ। মাভিসের দাবি, কিউবা থেকে তখন একপ্রকার অপহরণ করেই ম্যারাডোনা নিয়ে এসেছিলেন তাঁকে। প্রথমে বাক্সে ভরে সবার অগোচরে মাভিসকে আর্জেন্টিনায় আনতে চাইলেও বন্ধু ফিদেল কাস্ত্রোর সহযোগিতা ও বিশেষ অনুমতিতে বুয়েনস এইরেসে মাভিসকে নিয়ে যান ম্যারাডোনা। দুজনের সম্পর্কের শুরুটা কিউবার রাজধানী হাভানাতেই। মাভিস সেখানকারই মেয়ে।

‘ইনফোবে’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মাভিস বলেছেন, ‘২০০১ সালে একবার আমি ম্যারাডোনার সঙ্গে আর্জেন্টিনায় আসি। এবার দ্বিতীয় দফায় এলাম। আমাকে বাক্সে ভরে সবার অগোচরে আনার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু পরে দিয়াগোর বন্ধু ফিদেল কাস্ত্রোর সহযোগিতা ও বিশেষ অনুমতিতে বুয়েনস এইরেসে আমি যেতে পারি।’

মাভিসকে নিয়ে ম্যারাডোনা উঠেন হাভানার এক হোটেলে। সেই হোটেলে মাভিসের মাও এসেছিলেন মেয়ের সঙ্গে দেখা করতে।

মাভিস আরও বলেন, ‘ম্যারাডোনা আমার মুখ চেপে রেখেছিলেন, যাতে আমি চিৎকার না করতে পারি। আমি তাই কিছু বলতে পারিনি। এরপর আমাকে ধ’র্ষ’ণ করেন তিনি। সেদিন মা আমার সঙ্গে দেখা করতে এসেছিলেন। তিনি জানতেন, আমরা ওই হোটেলের কোন কক্ষে ছিলাম। কিন্তু ডিয়েগো কক্ষের দরজা খোলেন নি। আমার কেঁদে কেঁদে দরজায় ধাক্কা দিচ্ছিলেন । পরে ক্লান্ত হয়ে আমার মা চলে যান। কারণ, ম্যারাডোনা দরজা খুলছিল না।’

২০ বছর আগের এই ঘটনা এতদিন পর সামনে আনার কারণ সম্পর্কে জানতে চাওয়া হয় মাভিসের কাছে। জবাবে তিনি বলেন, ‘দেখুন, ফিদেল কাস্ত্রোও মারা গেছেন, ম্যারাডোনাও মারা গেছেন। আমার মেয়ের বয়স এখন ১৫ বছর। মনে হয়েছে, আমার মেয়ের বয়স এখন ঠিক তেমন, যে বয়সে আমার সঙ্গে ওসব হয়েছিল। আমি হোটেল থেকে বেরুতে পারতাম না, আমাকে আটকে রাখা হয়েছিল। আমাকে অপহরণ করে নিয়ে আসা হয়েছিল। আমি কিছুই জানতাম না শহরটার ব্যাপারে। সব সময় একজন বা দুজন আমাকে দেখে দেখে রাখতো।’

২০০১ সালের অক্টোবরে বুয়েনস এইরেসে বোকা জুনিয়র্সের মাঠ লা বোম্বানেরায় ম্যারাডোনার আর্জেন্টিনা একাদশের বিপক্ষে মাঠে নেমেছিল বিশ্ব একাদশ। সে ম্যাচের জন্যই মাভিসকে নিয়ে আর্জেন্টিনায় এসেছিলেন ম্যারাডোনা। পরিকল্পনা ছিল, ম্যাচ শেষে আবারও কিউবায় ফেরত যাবেন তিনি। কিন্তু পরে সে পরিকল্পনায় পরিবর্তন আসে, আরও বেশ কিছুদিন আর্জেন্টিনায় থেকে যান তাঁরা। কিন্তু কেন?

উত্তর জানলে চমকে যেতে হবে, ‘ম্যারাডোনা কৃত্রিমভাবে আমার স্তন প্রতিস্থাপন (ব্রেস্ট ইমপ্লান্ট) করাতে চেয়েছিলেন। আমি তখন নাবালিকা, তখন এ কাজ করতে হলে অভিভাবকের সম্মতির দরকার হয়। কিন্তু ম্যারাডোনা ওসবের ধার ধারেননি। যে কারণে আর্জেন্টিনায় বেশি দিন থাকতে হয় আমাদের। ম্যারাডোনা ছোট স্তন পছন্দ করতেন না। তাঁর বিশেষ আগ্রহেই এ কাজ করতে হয়। কিন্তু আমার শরীরে পর্যাপ্ত চামড়া না থাকার কারণে ম্যারাডোনার প্রত্যাশা অনুযায়ী স্তনের আকার দেওয়া সম্ভব হয়নি।’

এছাড়াও ম্যারাডোনার বিরুদ্ধে শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ আনেন মাভিস ।

আহাস/ক্রী/০০৯