Download WordPress Themes, Happy Birthday Wishes

ফুটবলারদের ভাগ্য অনিশ্চয়তায় ফেলে দিলো বাফুফে !

ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ

করোনা ভাইরাস মহামারীর কারণে গেলো মার্চে বন্ধ হয়ে যায় বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ (বিপিএল) ফুটবলের খেলা । বিশ্বের অনেক দেশই করোনা পরিস্থিতি উন্নত হওয়ায় ফের শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিজেদের ঘরোয়া ফুটবল লীগ । যদিও সেই পথে হাঁটে নি বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) ।

রবিবার (১৭ মে) বাফুফে ভবনে জরুরী বৈঠকের মাধ্যমে ২০১৯-২০ মৌসুমের প্রিমিয়ার লীগ বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে । এছাড়াও পরবর্তী স্বাধীনতা কাপ ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হচ্ছে না বলে জানিয়ে দিয়েছে বাফুফে ।

জানা গেছে , ক্লাবের লোকসানের কথা বিবেচনায় রেখে স্থগিত হওয়া লীগ মৌসুম বাতিল করেছে বাফুফে । সিংহভাগ ক্লাবের সিদ্ধান্ত মেনেই নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটি।

বৈঠক শেষে কার্যনির্বাহী কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী সাংবাদিকদের বলেন, ‘লীগ যেহেতু অসমাপ্ত, মাত্র ছয়টি ম্যাচ বা পাঁচ ম্যাচ খেলা হয়েছে তাই লিগের সমাপ্তি টানা যাচ্ছে না। ক্লাবদের সঙ্গে পরামর্শ করেই লিগ পরিত্যাক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এই লিগে কেউ চ্যাম্পিয়ন বা রেলিগেশন থাকছে না। যেহেতু লিগ পরিত্যাক্ত করা হয়েছে।’

এদিকে মাঝপথে লীগ বাতিল হওয়ায় পারিশ্রমিক নিয়ে অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে গেছেন খেলোয়াড়রা । বিশেষ করে দেশীয় খেলোয়াড়রা পড়তে চলেছেন আর্থিক লোকসানের মুখে । বিদেশি ফুটবলারদের সঙ্গে ক্লাবের মাসভিত্তিক চুক্তি হলেও স্থানীয়দের সঙ্গে মৌসুমভিত্তিক চুক্তি হয়। তাদের সঙ্গে দলের চুক্তির বিষয়টি কোথায় দাঁড়াবে বা কতটুকু পারিশ্রমিক তারা পাচ্ছে সেই বিষয়েও কোনও নির্দেশনা আসেনি বাফুফের কার্যনির্বাহী কমিটির জরুরি বৈঠক থেকে।

এমনিতেই বাংলাদেশের ক্লাবগুলোর বিরুদ্ধে খেলোয়াড়দের পুরো পারিশ্রমিক পরিশোধ না করার অভিযোগ বহু পুরনো । প্রতি মৌসুম শেষ হওয়ার পরেও বেশীরভাগ খেলোয়াড়ের কিছু না কিছু পারিশ্রমিক বকেয়া রয়ে যায় ক্লাবের কাছে । আর এবার তো মৌসুমই শেষ হচ্ছে না । এই অবস্থায় নিজেদের পাওনা পারিশ্রমিক তারা পাবেন , এমন আশা খুবই ক্ষীণ । তার উপর আগেভাগেই যেখানে ক্লাবগুলো বলে রেখেছে নিজেদের আর্থিক ক্ষতির কথা ।

এদিকে বাফুফে থেকে খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক বিষয়ে কোন নির্দেশনা না আসায় বিষয়টি হয়ে দাঁড়িয়েছে জটিল ।

এই বিষয়ে সালাম মুর্শেদি জানান , ‘ আমরা এবার শুধু লীগের ভবিষ্যৎ নিয়ে সিদ্ধান্তের জন্যই সভা ডেকেছিলাম । যা ঘোষণা করে দেয়া হয়েছে । ‘

বাংলাদেশের সাবেক তারকা ফুটবলার বলেন , ‘ পরবর্তী সময়ে আমরা আরও কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করব । সেখানে খেলোয়াড়দের পাওনা’র বিষয়েও আলোচনা হবে । আলোচনা হবে পরবর্তী লীগ মৌসুম নিয়ে । আশা করি , যখন এই বিষয়গুলো আসবে সেগুলো নিয়ে ভিন্ন মিটিং করে আমরা পরবর্তী সিদ্ধান্ত নিবো।’

বাফুফে যাই বলুক ,  খেলা না হলে ফুটবলাররা যে পুরো পারিশ্রমিক   পাবেন না সেটা তারা নিজেরাই ভাল করে জানেন ।  সেই কারণেই ক্লাব কর্মকর্তারা লীগ বাতিল চাইলেও খেলোয়াড়রা ছিলেন বিপরীত অবস্থানে । ফুটবলারদের অনেকেই ছিলেন যে কোনভাবে লীগ শেষ করার পক্ষে । তাতে খেলা কমিয়ে লীগের পরিসর কমিয়ে আনার কথাও বলেছেন কেউ কেউ ।  আর্থিক সমস্যা কাটানো কিংবা চুক্তি ঠিক রাখার স্বার্থে পরিস্থিতি বিবেচনা করে এমন মতামত দিয়েছিলেন ফুটবলাররা । 

এই নিয়ে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের গোলরক্ষক মাজহারুল ইসলাম হিমেল বাফুফে’র সভার আগে  বলেছিলেন , ‘একজন পেশাদার ফুটবলার হিসেবে আমি কখনোই চাই না লীগ  বাতিল হোক। এবারের লীগ  বাতিল হলে আমাদের একটি বছর হারিয়ে যাবে। এমন হলে আর্থিকভাবে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবো। বাফুফেসহ সবার কাছে অনুরোধ  থাকবে পরিস্থিতি বিবেচনা করে স্বল্প পরিসরে হলেও পরবর্তীতে যেন লিগের খেলা হয়। ‘ 

যদিও বাফুফে ফুটবলারদের সেই অনুরোধ রাখে নি । বরং  বরাবরের মত ক্লাবের স্বার্থ বিবেচনায় রেখেই সিদ্ধান্ত দিয়েছেন তারা । সেই কারণে বাফুফে’র দরবারে আরও একবার উপেক্ষিত হয়েছে ফুটবলার আবেদন আর স্বার্থ ।  এমন সিদ্ধান্তে ফুটবলারদের ক্ষতি হলেও বাফুফে’র কি এসে যায় ! 

আহাস/ক্রী/০০৬