
ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ
বিশ্বকাপের পর আর্জেন্টিনা প্রথমবারের মতো মাঠে নেমেছিল পানামার বিপক্ষে । ম্যাচটি নিজেদের মাঠে আর্জেন্টিনা জিতেছে ২-০ গোলে । এদিকে , বুধবার ( ২৮ মার্চ ) মাদ্রে দে সিউদাদেস স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনার প্রতিপক্ষ কুরাসাও ।
কুরাসাও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের দেশ । ২০২২ সালের ডিসেম্বরে ফিফা র্যাংকিং এ তারা পেয়েছিল ৮৬তম স্থান । ২০২২ সালে আট ম্যাচ খেলেছে তারা । দু’বার হেরেছে এশিয়ার দুর্বল শক্তি ইন্দোনেশিয়ার কাছে । ফিফার ২০২ নাম্বার অবস্থানে থাকা আরুবার সাথেও হেরেছে টাইব্রেকারে ।
আর্জেন্টিনার মতো বিশ্বচ্যাম্পিয়ন দল কেন খেলছে কুরাসাওয়ের বিপক্ষে ? এটা কোন প্রতিযোগিতামূলক খেলা নয় যে কুরাসাওদের এড়িয়ে যাওয়ার উপায় নেই । বরং প্রীতি ম্যাচের আবহে আর্জেন্টিনা নিজেরাই বেছে নিয়েছে কুরাসাওকে । বেশীরভাগ ফুটবল ভক্তের ধারণা , মেসির আন্তর্জাতিক গোলের সংখ্যা বাড়াতেই কুরাসাও আর পানামার বিপক্ষে ম্যাচ ।
পানামার বিপক্ষে মেসি পেয়েছে একটি গোল । আন্তর্জাতিক ফুটবলে তাঁর গোলের সংখ্যা এখন তৃতীয় সর্বোচ্চ ৯৯টি । ১০৮ গোল সাবেক ইরানী ফুটবলার আলী দাইর । ১২২ গোল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর । মেসি ধাওয়া করছেন রোনালদোকে ।
২০২১ সাল মেসি শেষ করেছিলেন ৮০ গোল নিয়ে । ২০২২ সালে করেছেন জাতীয় দলের হয়ে ক্যারিয়ার সেরা ১৮ গোল । বছরের শুরুতে মেসি প্রথম তিন ম্যাচে খেলেছেন বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে । প্রতিপক্ষ কলম্বিয়া , ভেনেজুয়েলা আর ইকুয়েডর । তিন ম্যাচে কেবল ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে পেয়েছিলেন গোলের দেখা । গোল পান নি ইটালির বিপক্ষে লা ফিনালিসিমা ম্যাচেও । কিন্তু পরবর্তী চার ম্যাচেই মেসি করেন ১০ গোল ! প্রতিপক্ষ এস্থনিয়া , হন্ডুরাস , জ্যামাইকা আর সংযুক্ত আরব আমিরার । এস্থনিয়ার বিপক্ষে তো আন্তর্জাতিক ফুটবলে প্রথম পাঁচগোল করে সবাইকে হতবাক করে দেন মেসি ।
কাতার বিশ্বকাপে সাত গোল করেছিলেন মেসি । যার মধ্যে পেনাল্টি গোল ছিল চারটি । কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে প্রতিটা ম্যাচে আর্জেন্টিনার জন্য বরাদ্দ ছিল একটি ‘হাস্যকর’ পেনাল্টি । তবু মেসির দুর্ভাগ্য বলতে হবে , পোল্যান্ডের বিপক্ষে আরও একটি ‘মুফতে’ পাওয়া স্পটকিক কাজে লাগাতে পারেন নি তিনি । নইলে আট গোল করে কিলিয়ান এমবাপ্পের গোল্ডেন-বুটটাও নিয়ে যেতে পারতেন বগলদাবা করে !
২০২২ সালে মেসি কাটিয়েছেন আন্তর্জাতিক ফুটবলে সেরা সময় । করেছেন এক ক্যালেন্ডার-ইয়ারে নিজের সর্বোচ্চ গোল । যা তাঁকে তৃতীয় ফুটবলার গোলের সেঞ্চুরির কাছাকাছি নিয়ে গেছে । গোলগুলি কিভাবে আর কোন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে এসেছে , সেটা কোন ব্যাপার না ! মেসি অপ্রতিরোধ্যভাবে ছুটছেন , এটাই আসল কথা !
২০২৩ সালেও মেসি করবেন অগনিত গোল । প্রতিপক্ষ হিসেবে পানামা আর কুরাসাওয়ের সাধ্য নেই তাঁকে আটকাবার । আগামী এক বছরে এমন দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলে মেসি আন্তর্জাতিক গোলের বিশ্বরেকর্ডের আরও কাছাকছি চলে যাবে , নিঃসন্দেহে ।খেলবেন হয়ত আগামী সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশের বিপক্ষেও । এক সময় ভাঙবেন সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক গোলের রেকর্ড । ঠিক যেভাবে রেফারির পক্ষপাতিত্বে (ঘুষের অভিযোগ প্রকাশ্য) বার্সেলোনায় গড়ে এসেছেন বহু রেকর্ড । ঠিক একইভাবে আন্তর্জাতিক ফুটবলেও সেরা গোলদাতা হওয়ার সবচেয়ে সহজ পথ বেছে নিয়েছেন মেসি ।
আহাস/ক্রী/০০৭