Download WordPress Themes, Happy Birthday Wishes

১৫ বছর খেলেও কমনসেন্স হয় নি টাইগারদের

ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ

বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের কমনসেন্স বলে কিছু নেই , এমনটাই অভিযোগ করেছেন চলমান বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স কোচ মোহাম্মদ সালাউদ্দিন। গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্রিকেটারদের মারাত্মক সব ভুল করে বসাকে ইঙ্গিত করেছেন তিনি ।

চলমান বিপিএল মাতাচ্ছেন বিদেশী ক্রিকেটাররা । বাংলাদেশ জাতীয় দলের পারফর্মারদের মধ্যে সাকিব আল হাসান ছাড়া কেউ ধারাবাহিক না । জাতীয় দলের বাইরে থাকা নাসির হোসেন সবাইকে অবাক করেছেন । বল হাতে বুড়ো বয়সে জ্বলে উঠেছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা । এছাড়া আসরের সেরা দশ বলার তালিকায় হাসান মাহমুদ আছেন , যিনি সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় দলে খেলছেন । তাসকিন আহমেদ ৯ ম্যাচে ৯ উইকেট নিয়ে কিছুটা মান রেখেছেন । নইলে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন , রুবেল আহমেদ , মোসাদ্দেক হোসেন , এবাদতদের কথা বলার মতো নয় । এক কথায় , বাংলাদেশের জাতীয় দলে খেলছেন এমন কোন বলার সেরা পাঁচে নেই ।

ব্যাটিংয়ে নাজমুল হাসান শান্ত আর সাকিব শীর্ষে আছেন । আনামুল হক বিজয় ১০ নাম্বারে । আর কোন জাতীয় ক্রিকেটারের অস্তিত্ব নেই সেরা দশে । সব মিলিয়ে বর্তমান টাইগারদের হাল করুণ চলমান বিপিএলে ।

বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আউট হয়ে যাওয়া , ক্যাচ বা মিস ফিল্ডিংয়ের পুরনো রোগ তো আছেন । শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে চট্টগ্রাম চ্যালেঞ্জার্সের বিপক্ষে জিতেছে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স। সহজ ম্যাচটি অনেকটা কঠিন করে ফেলেছিল কুমিল্লা। দুই স্থানীয় ক্রিকেটার ইমরুল কায়েস ও সৈকত আলীর সুযোগ থাকলেও তারা ভালো করতে পারেননি। পরে রিজওয়ানের ব্যাটিংয়ে ম্যাচ জেতে কুমিল্লা। পাকিস্তানের মোহাম্মদ রিজওয়ান দায়িত্ব নিয়ে পুরো মৌসুম কুমিল্লার হয়ে ব্যাটিং করেছেন। কিন্তু সেখানে বার বার ব্যর্থ হচ্ছেন স্থানীয়রা। সবমিলিয়ে তাই ক্ষুব্ধ কুমিল্লার কোচ সালাউদ্দিন ।

সালাউদ্দিন বলেছেন, ‘স্থানীয় খেলোয়াড়দের কাছে আমি একটা সামন্য কমনসেন্স (সাধারণ জ্ঞান) চাই, যে একটা কমনসেন্স থাকে। তাদের আসলে কমনসেন্স আছে কিনা এটা নিয়ে আমার সন্দেহ। আপনি যদি ১৫ বছর ধরে ঘরোয়া ক্রিকেট মিরপুরে খেলেন, আপনি জানেন যে আপনার আসলে কী করতে হবে। সে কমনসেন্স যদি আপনার না থাকে তাহলে আসলে আমি হতাশ।’

স্থানীয় ক্রিকেটারদের উপর বিরক্ত কুমিল্লার কোচ জানা , ‘‘আমাদের ছেলেরা ক্রিকেট নিয়ে চিন্তা করে কিনা সেটা নিয়ে আমার সন্দেহ। রিজওয়ানের সঙ্গে আমাদের দেশের অনেক ওপেনার ধরেন বা অলরাউন্ডার ধরেন, তাদের শটসের লিমিটেশন অনেক বেশি বা তারা হয়তো আরও জোরেও মারতে পারে। সব দিকে মারতে পারে, কিন্তু খেলতে গেলে দেখা যায় উল্টোটা হচ্ছে।’

তিনি আরও যোগ করেন, ‘আমি আরেকটা প্রেস কনফারেন্সে বলেছিলাম, আমাদের দেশে অনেকে হয়তো মাথা দিয়ে খেলে, অনেকে খেলে না। বেশিরভাগই মাথা ছাড়া খেলে। আল্লাহ যেদিন মিলিয়ে দেয়, মানে প্রশ্ন কমন পড়ে যায়, সেদিন ভালো খেলে, যেদিন পড়ে না সেদিন ভালো খেলে না। খুবই হতাশাজনক। আপনি যখন ১০-১২ বছর ক্রিকেট খেলছেন, তখন সামান্য কমনসেন্স থাকা উচিত। কখন কি করতে হবে, সেটি জানা জরুরি।’

লম্বা সময় ধরে ক্রিকেট কোচিংয়ের সঙ্গে জড়িত সালাউদ্দিন মনে করেন, স্থানীয়দের ক্রিকেট জ্ঞান কম। তার কথায়, ‘আমার মনে হয় তাদের ক্রিকেট জ্ঞান অনেক কম। সামান্য জিনিস এ উইকেটে আমার কী করতে হবে বা কোন বোলারকে আমি কখন চার্জ করব। যখন সব কিছু আমার নিয়ন্ত্রণে তখন কীভাবে খেলবো। এ বুদ্ধি যদি কারো না হয়, তাহলে তারা ক্রিকেট কবে শিখবে ওপরওলা জানে।’

এই সমস্যা সমাধানে কোচদের ভূমিকার কথাও উল্লেখ্য করেছেন সালাউদ্দিন, ‘আপনার গ্রামার ছোটবেলা থেকে খারাপ থাকলে, আপনি ইংলিশ রচনা লিখতে পারবেন না। আমরা আসলে ছোটবেলা থেকে তাদের ওভাবে গড়ে তুলছি। আমরা নিজেরাই সব সময় বেশিরভাগই কোচ নির্ভর খেলোয়াড়, কোচ যেটা বলবে সেটাই রাইট। প্রকৃতপক্ষে ভেতরে গিয়ে তো কোচ খেলবে না। সিস্টেমেই গলদ। ছোটবেলা থেকে যদি সেটআপ ভালো মতো হতো। প্রকৃতপক্ষে তাদের যদি আমরা স্বাধীনভাবে গড়ে তুলতে পারতাম, তাহলে এ সমস্যাটা হতো না। আমরা যারা কোচিং করাই তাদেরই সমস্যাটা বেশি, ছেলেদের দোষ দিয়ে লাভ নাই। একটা পর্যায়ে এসে ব্রেনটা কাজও করে না। ছোটবেলা থেকে যদি আমাদের কোচিং ম্যাথোড পরিবর্তন করি তাহলে হয়তো কাজে আসবে।’

আহাস/ক্রী/০০৯