
ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ
বাংলাদেশের ক্রিকেটে মাশরাফি বিন মুর্তজা ‘লড়াকু’ মানসিকতার প্রতিচ্ছবি । একের পর এক ইনজুরি যাকে কাবু করতে পারে নি । ফিরে এসেছেন বারবার । দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করেছেন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে । দেশের সম্মান রক্ষায় নিংড়ে দিয়েছেন নিজের সামর্থ্যের শেষ বিন্দু । কিন্তু সেই মাশরাফির ক্রিকেট থেকে বিদায় নেয়া হয় নি সম্মানের সাথে । অনেকটা নীরবেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিয়েছেন তিনি ।
দেশের হয়ে ৩৬ টেস্ট , ২২০ ওয়ানডে আর ৫৪ টি-টুয়েন্টি খেলেছেন মাশরাফি । শেষবার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নেমেছিলেন ২০২০ সালের মার্চে । অধিনায়ক হিসেবে নিজের ৫০তম জয় তুলে নিয়ে ক্রিকেটকে বিদায় জানান । । জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সেই ম্যাচের পর আর মাঠে নামেন নি দেশের হয়ে ।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় বললেও ঘরোয়া আসরে এখনও সক্রিয় । চলমান বিপিএলে তিনি সিলেট স্ট্রাইকার্সের অধিনায়ক। আট মাস পর বিপিএলে ফিরে বেশ দারুণ পারফর্ম করছেন ডানহাতি পেসার। ৭ ম্যাচে ২৩ ওভার হাত ঘুরিয়ে ১৭৭ রানে পেয়েছেন ৯ উইকেট। ইকোনমি ৭.৬৯। শেষ ম্যাচে তার বোলিংয়ে দুটি সুযোগ হাতছাড়া করেছেন ফিল্ডাররা। নয়তো বোলিং ফিগার আরও সুন্দর দেখাত।
মাশরাফি আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায়ের সময় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের তরফ থেকে কোন আনুষ্ঠানিক সম্বর্ধনা পান নি । যদিও বিসিবি অনেকবার তাঁকে আনুষ্ঠানিক বিদায়ের কথা বলেছিল । কিন্তু সেটা কথার কথাই রয়ে গেছে । এই নিয়ে মাশরাফি জানিয়েছেন , ‘ ‘সত্যি বলতে আপনারা যদি হাজারবার বলেন, আমি হাজারবার বলব যে, আমি কিছুই আশা করি না। আই হ্যাভ নো এক্সপেক্টেশন।’
নিজে না পেলেও নিজের সতীর্থদের সম্মানের সাথে বিদায় চান মাশরাফি । মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ , তামিম ইকবাল , মুশফিকুর রহিমদের ক্যারিয়ার শেষের পথে । তারা এক এক করে বিভিন্ন সংস্করণের ক্রিকেটকে বিদায় জানাচ্ছেন । সাকিব আল হাসানেরও বয়স হচ্ছে । হয়ত খুব বেশীদিন আর খেলবেন না ।
মাশরাফি জানান , ‘ সাকিব, মুশফিক, রিয়াদ, তামিম স্বীকার করুক বা না করুক; তারা বাংলাদেশের কিংবদন্তি। এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই। তারা যেন সম্মানের সঙ্গে মাঠ থেকে বিদায় নিতে পারে। দীর্ঘদিন তারা শ্রম দিয়েছে । ‘
মাশরাফি আরও বলেছেন , ‘ অনেক কিছু ত্যাগ করেছে তারা। মানুষ শুধু হিসাব করে কত টাকা পেল। কিন্তু তারা যে শ্রম দিয়েছে, দিনের পর দিন ত্যাগ স্বীকার করেছে, এটা কেউ জানে না। সম্মানটা যেন তারা পায়।’
বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক জানান , ‘ আমি যখন ক্রিকেট খেলা শুরু করি, তখন জাতীয় দলে খেলব বলে আশা করিনি। আমার বাসা থেকে প্রেশার ছিল যে তুমি পড়ালেখা করো, আমি ক্রিকেটটাকে বেছে নিয়েছি। তখন কিন্তু আমার এত অর্থ, গাড়ি, বাড়ি কিছুই ছিল না। সো ক্রিকেট দিয়েই কিন্তু আমার জীবনের সব কিছু হয়েছে। ক্রিকেট আমার প্যাশন থেকে প্রফেশন হয়েছে। প্যাশনটা এমন একটা পর্যায়ে গেছে যে আমাকে অর্থ না দিলেও আমি ক্রিকেট খেলতাম। ইটস নট অ্যাবাউট প্রফেশন অ্যাট দ্য মোমেন্ট, ইটস অ্যাবাউট মাই প্যাশন।’
আহাস/ক্রী/০০৫