Download WordPress Themes, Happy Birthday Wishes

ফুটবল ও ক্রিকেট দিয়েই প্রজন্ম চেনাক বাংলাদেশকে

আদম তমিজী হকঃ

১১ নভেম্বর ২০২২, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে দেশের যুবশক্তি তথা আওয়ামী যুবলীগের মহা-মহাসমাবেশ হয়ে গেল। যথারীতি, পঞ্চাশ বর্ষ পূর্তির যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে উপস্থিত ছিলেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি দেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী করার তাগিদ দিয়ে বলেন যে, ‘আমরা সরকার গঠন করে দেশের উন্নয়ন করে যাচ্ছি। এই উন্নয়নের কাছে সারা বাংলাদেশের মানুষ নতুন করে একটা বাঁচার সম্ভাবনা পেয়েছে, স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছে। কারণ এই দেশকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় গড়ে তুলতে চাই। এই ক্ষেত্রে তরুণরাই হচ্ছে সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ। তারুণ্যেই সমৃদ্ধি। ২০১৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহার আমরা তরুণদের জন্যই উৎসর্গ করেছি।’

লেখক আদম তমিজী হক

তরুণেরাই পারে ও পারবে। তারা যদি বাংলাদেশের জন্য পরিশ্রমি হয়ে কৃষিভিত্তিক সমাজের প্রতিনিধি হয়, বাংলাদেশ বেঁচে যায়। ঠিক একইভাবে শিল্প, প্রযুক্তির সাথে থেকে আমাদের প্রজন্ম লড়াই করতে পারলে আমরা অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধশালী হতে পারবই। অপার সম্ভাবনার দেশ হিসাবে আমাদের প্রাকৃতিক সম্পদ, কৃষি, মৎস্য, পর্যটন, শিল্পখাতগুলো একদিন না একদিন আরো উঁচুতে নিয়ে যাবে লাল সবুজের বাংলাদেশ কে।

আমাদের ছেলেমেয়েরা ফুটবল ও ক্রিকেটের ভক্ত, তা নিয়ে নতুন করে কিছু বলার নেই। এমনিতে ক্রিকেট বিশ্বে বাংলাদেশ তার নাম আলাদা করে চেনাতে পারলেও ফুটবলে পারা যাচ্ছে না। বরং, আমাদের মেয়েরা ফুটবলে ভাল খেলছে। দক্ষিণ এশিয়ার চ্যাম্পিয়ন দলও আমরা। প্রধানমন্ত্রী এই সেদিন বললেন, আমাদের মেয়েরা করে দেখাতে পারলেও ছেলেরা পারছে না।

এদিকে ২০ নভেম্বর ২০২২ থেকে শুরু হতে যাচ্ছে কাতার বিশ্বকাপ ২০২২। দ্য গ্রেটেস্ট শো অফ আর্থ হিসাবে ফিফার এই আয়োজন নিয়ে সারা বিশ্বে উন্মাদনা বাড়ছে। বাংলাদেশেও ফুটবলের জ্বর ছড়িয়ে পড়েছে। চলছে প্রিয় দেশের পতাকা ক্রয়ের হিড়িক। অতি অবশ্যই ফুটবলভক্তরা প্রিয় দেশের জার্সি কিনছে। এই উচ্ছ্বাস ঠেকানোর পথ নেই। প্রিয় বাংলাদেশ খেলতে পারুক আর না পারুক, এই দেশের মানুষ ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, জার্মানি, ইংল্যান্ড, ফ্রান্স ও পর্তুগাল নিয়ে ঘুম কে ‘না’ করে দিয়েছে।

আমার বক্তব্য অবশ্য ভিন্ন। আমি চাই, বিলম্ব হোক, কিন্তু একদিন না একদিন বাংলাদেশকে বিশ্বকাপ ফুটবলে যেতেই হবে। যে দেশে ফুটবলের এত পাগল দর্শক, সেই দেশটি কেন পিছিয়ে থাকবে ? স্বাধীনতার পরে আমরা শহীদ শেখ কামালের মত সংগঠক পেয়েছিলাম। তিনি বেঁচে থাকলে খুব সম্ভবত স্বাধীনতা অর্জনের প্রথম ত্রিশ বছরের মধ্যেই বিশ্বকাপ ফুটবলে বাংলাদেশ প্রতিনিধিত্বকারি দেশ হত।

আমাদের প্রধানমন্ত্রী ঠিক যেন তার সেই ভাইয়ের মত করেই। অথচ, আমরা তার আবেগকে ধারণ করতে পারলাম না। সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে আমরা ঠিকই ফুটবলে একটা জায়গা করে নিতে পারতাম। ফুটবল আর ক্রিকেট দিয়েই প্রজন্ম চেনাক বাংলাদেশকে। বিদেশি রাষ্ট্রের পতাকা টানিয়ে, শত শত দৈর্ঘ্যের পতাকা বানিয়ে কী লাভ ? আমরা আমাদের পতাকা নিয়ে কবে গ্রেটেস্ট শো তে যেয়ে আমার সোনার বাংলা গাইতে পারব ?

লেখক তমিজী হক কে ঢাকা উত্তরের মেয়র হিসাবে দেখতে চায় প্রজন্মও

১১ নভেম্বরের যুবলীগের সমাবেশে তরুণদের দেখেছি। দেখেছি পরিণত যুবকদেরকেও। কিশোর থেকে তরুণ হওয়ার পথে—এমন অনেককেই দেখেছি। তারা এখনও ইচ্ছে করলে পারবে। আমাদের ছোট ছোট বাচ্চাদের পড়ার চাপ কমিয়ে দিয়ে খেলাধুলার প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর জন্য উদ্যোগ নিতে হবে। ক্রিকেটের সফলতা কেন এসেছে ? নগর ও পল্লিতে পাড়া -মহল্লায় বাচ্চারা ব্যাট বল নিয়ে খেলেছে ও খেলছে। ফুটবলের স্বর্ণযুগ ফেরাতে হবে। মাদকমুক্ত সমাজ করতে চাইলেও ফুটবল ও ক্রিকেট নিয়ে প্রজন্মকে পড়ে থাকতে হবে। তারা রাত জেগে ইউরোপের ক্লাব ফুটবল দেখে, বিশ্বকাপের সময়ে উত্তেজনার পারদে বাস করে—-তাহলে নিজেরা ফুটবলে বিপ্লব কেন করতে পারছে না ? পারতে হবে।

একজন শেখ কামালের মত সংগঠক কেন দেশে বাড়ছে না ? ক্রীড়া মন্ত্রণালয়কেও বৈপ্লবিক উদ্যোগের মাধ্যমে ফুটবলকে বিশ্বমানে নিয়ে যেতে হবে। প্রয়োজনে আমরা আমাদের সেরাটা ফুটবলের জন্য দিতে রাজী আছি। খেলোয়াড়, সংগঠক ও পৃষ্ঠপোষকতার সমন্বয়ে বাংলাদেশকে পারতেই হবে।

কে/আ/০৯৭৮