আদম তমিজী হকঃ

রাজনীতি করতে হলে মানুষের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পছন্দগুলো ধারণ করার ব্যাপারও আছে। এই যেমন, দেশের নামধারী রাজনৈতিক দল বিএনপি আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করতে চায়। এই সমাবেশ নিয়ে দেশ ওলট পালট করে দেবে বলে হুংকারও দিচ্ছে তাঁরা। কিন্তু ২০ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ ফুটবল ২০২২।
কাতার বিশ্বকাপ নিয়ে উন্মাদনা বাড়ছে। বাংলাদেশ বরাবরই ফুটবলের জন্য উগ্রবাদীও। এমতাবস্থায় বিএনপি, যারা জনগণের দল কখনই হতে পারেনি, তাঁরা কর্মসূচি রেখেছে বিশ্বকাপের মধ্যেই। এতে করে বোঝা যায়, বাঙ্গালির আবেগ ধারণকরত তাঁদের সেই দূরদৃষ্টিই নেই।
এদিকে বিশ্বকাপের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হবে ১৮ ডিসেম্বর। ঠিকই দেশের শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগ জাতীয় সম্মেলন রেখেছে ২৪ ডিসেম্বর, ২০২২ তারিখে। এর অর্থ হল, আওয়ামী লীগ বোঝে, মানুষের ভাললাগা কি, জনগণের উচ্ছ্বাসের দাম দিতে জানে শেখ হাসিনার দলটি। প্রধানমন্ত্রী নিজেও ফুটবলকে অতি মাত্রায় ভালবাসেন। সূত্রমতে তিনি ব্রাজিল দলের সমর্থক।
কাতার আর ইকুয়েডর এর মধ্যকার খেলা দিয়ে বিশ্বকাপের উদ্বোধনী ম্যাচ হতে যাচ্ছে। চেষ্টা করব, বিশ্বকাপ ফুটবল নিয়ে বেশ কিছু লেখা ক্রীড়ালোকের জন্য প্রদান করতে। আমি বরাবরই ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর ভক্ত। দেখব, তিনি কতদূর এগিয়ে যেতে পারেন। অপেক্ষায় আছি।
বিএনপি যে একটা ছন্নছাড়ার দল, তা নিয়ে নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখে না। তাঁদের লন্ডন প্রবাসী পলাতক নেতা তারেক রহমান কখনো ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ম্যাচ দেখেছেন, তা শোনা যায় নি। এরা রাজনীতির বাঁকা রাস্তায় হেটে পেছনের পথ দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায় শুধু। এদের কাছে ফুটবল কিংবা ক্রিকেটের কোন গুরুত্ব নেই। মনটি তাঁদের সাংস্কৃতিক নয়। নয় বলেই বিএনপির বিদগ্ধশ্রেণির মধ্যে কেহ সাহিত্য, সংস্কৃতিতে ভাল করছে, শোনা যায় না। একটি দেশপ্রেমিক গোষ্ঠী হিসাবে চলতে গেলে রাজনৈতিক আবহের সাথে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পথচলা থাকতে হয়, যা তাঁদের মধ্যে দেখা যায় না। এদের মনহ ততটাই মন্দ শ্রেণির, পাকিস্তান চিন্তাধারায় তাঁদের ঘরোয়া সংস্কৃতি, যা আমাদেরকে শুধু কষ্টই দেয় না, কাঁদায়।
জার্মানি, ব্রাজিল, ফ্রান্স, আর্জেন্টিনা, পর্তুগাল, হল্যান্ড, ইংল্যান্ড বিশ্ব মাতাক। এশিয়ার শক্তি হিসাবে সৌদি আরব দারুণ কিছু করুক। আমি ইরান, জাপান ও কোরিয়ার খেলা দেখার জন্যও উদগ্রিব হয়ে আছি। চার বছর পর ফেরে বিশ্বক্রীড়ার শ্রেষ্ঠ ইভেন্ট টি। এটা দেখতে পারার মধ্যেও ইতিহাস জড়িয়ে যায়। সেখানে রাজনৈতিক আন্দোলন তুচ্ছ হয়ে পড়ে। এই জ্ঞানটুকুও বিএনপির মধ্যে নেই। সকলের জন্য শুভ কামনা !
লেখকঃ রাজনীতিক ও সমাজকর্মী।