
কামরুল হাসান নাসিমঃ
এই তো আর বেশ কয়েক ঘন্টা পর ! কাতার বনাম ইকুয়েডর ম্যাচ। কাতার বিশ্বকাপ ২০২২’র উদ্বোধনী ম্যাচ। গ্রুপ-এ থেকে দুইটি দেশের লড়াই। যা নিয়ে বিতর্ক শুরুও হয়েছে। বৈশ্বিক পর্যায়ে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা বোমা ফাটিয়েছে। গণমাধ্যমের দাবী, ম্যাচটি পাতান লড়াই হিসাবে আবর্তিত হতে যাচ্ছে।
এদিকে স্বাগতিক দেশ হিসাবে মেরুন বাহিনী কাতার কেমন করতে পারবে ? এমন প্রশ্নে আলোচনার চেয়ে আগ্রহ যেন অনেকের !
অন্যদিকে দক্ষিণ আমেরিকার ফুটবল জাতি হিসাবে ইকুয়েডরের পরিচিতি রয়েছে। ব্রাজিলের মত করে তাঁরাও হলুদ জার্সি গায়ে চড়িয়ে খেলে থাকে। তাঁরাও জানান দিতে চায়, আমরাও ফুটবলের দেশ। কিন্তু, ২০১৮ সালে ইচ্ছে করে হেরে যেয়ে তারা আর্জেন্টিনাকে বিশ্বকাপ ফুটবল খেলার সুযোগ করে দেয়। এমন অভিযোগের দায় এড়াতে পারেনা দেশটি।
অপরদিকে ফিফার সাবেক সভাপতি স্রেপ ব্ল্যাটার ভাল মানুষ সাজতে গিয়ে হালে কাতার এর স্বাগতিক দেশ হওয়া প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন। বলেছেন, আয়োজক দেশ হিসাবে কাতার কে পছন্দ করা সমীচীন হয় নাই। আবার সাবেক ফরাসী গ্রেট এরিক ক্যান্টোনা বলেছেন, কাতারে বিশ্বকাপ হওয়া অর্থহীন। সবকিছু ছাপিয়ে অর্থের জোরে মধ্যপ্রাচ্যে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এই বিশ্বকাপ নিয়ে চলছে তুমুল বিতর্ক। বহিছে ঝড় !

ফিফার বর্তমান সভাপতি অবশ্য বলছেন, ইউরোপ, তোমরা থামো—-তিন ঘন্টা বিয়ার না পান করলে তোমরা মরে যাবে না ! এলকোহল পান করার সীমিত ব্যবস্থায় ফুসছে বিশ্বের ফুটবলভক্ত পর্যটকেরা। অবশ্য পুরো একমাস থাকার মানসিকতায় অনেক ফুটবল ভক্ত এলকোহল পাবার দুরহ পরিস্থিতি দেখে মন খারাপ করছেন । আর যারা নির্দিষ্ট কিছু ম্যাচ দেখার জন্য যাচ্ছেন, তারা মুসলিম দেশের সংকীর্ণ সংস্কৃতিকে মানিয়ে নিয়েই বিশ্বকাপ দেখবেন।
বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না কাতার বিশ্বকাপের। শুরু না হতেই চলছে নানা সমালোচনা। যদিও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ইতোমধ্যে বলেছেন যে, এটি ইতিহাসের অন্যতম সেরা বিশ্বকাপ হতে যাচ্ছে। তা তিনি যতই বলুন না কেন, কাতার-ইকুয়েডর ম্যাচ নিয়ে অর্থ ইস্যু নতুন সংকট সৃষ্টি করেনি, তা বলা যায় না। অবশ্যই তা প্রভাব রাখছে। প্রথম ম্যাচটি স্থানীয় সময় অনুযায়ী রবিবার বিকেলে আল বায়েত স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হবে। বাংলাদেশ সময় অবশ্য রাত ১০টায়।
ক্রীড়ালোক, দেশের ক্রীড়ামাধ্যম হিসাবে পথিকৃৎ, তা নিয়ে নতুন করে ঘোষণা করার কিছু নেই। বিশ্বকাপ ২০২২ নিয়ে প্রতিটি ম্যাচের প্রেডিকশন দিতে যাচ্ছে সংবাদমাধ্যমটি। যা দেশের ইতিহাসে প্রথমই।
ফেলিক্স সানচেজ, কাতার দলের কোচ। তাঁর নেতৃত্বে এই প্রথম তারা বিশ্বফুটবলের বড় মঞ্চে খেলতে যাচ্ছে। অন্যদিকে দক্ষিণ আমেরিকার দেশটি আট বছরের অনুপস্থিতির পর বিশ্বকাপের চূড়ান্ত পর্বে ফিরেছে।
ধারণা করা যাচ্ছে যে, দুই দলের হয়ে যারা একাদশে খেলবেনঃ
কাতার
আল-শাইব, মিগুয়েল, আল-ওয়ারী, সালমান, হাসান, আহমেদ, হাতেম, বাউদিয়াফ, আল-হাইদোস, আলমোয়েজ আলী ও আফিফ।
ইকুয়েডর
ডমিঙ্গুয়েজ, প্রিসিয়াডো, টরেস, হিনক্যাপি, এস্টুপিনান, গ্রুয়েজো, ক্যাসিডো, সিফুয়েন্তেস, প্লাটা, ভ্যালেন্সিয়া, ইবারা।
ধারণা করা হচ্ছে, ইকুয়েডর ৪-৩-৩ ফরমেশনে দলকে খেলাবে। অন্যদিকে কাতার ৪-৪-২ পদ্ধতিতে যেতে পারে। মুলত কাউন্টার আক্রমণের ওপর ভর করে কাতার খেলবে, এমন ধারণা ভুল প্রমাণিত হতে পারে। শারীরিক সক্ষমতার দিক নিয়ে বললে, উভয় দলই শক্তি প্রদর্শন করে খেলবে। ইকুয়েডর কর্নার কিকের মাধ্যমে ম্যাচে একটি গোল আদায় করে বসতে পারে।
অন্যদিকে ক্ষিপ্রগতি পুঁজি করে আক্রমণ শানিয়ে কাতারও একটি গোল আদায় করতে পারে। এমন অবস্থায় ফল তো হয় ১-১ ! অপরদিকে আন্তর্জাতিক বিশ্বে অধিকাংশ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞরা ইকুয়েডর কে ২-১ গোলে বিজয়ী হিসাবে দেখাতে চাইলেও, ম্যাচটি নিজেদের করে নিতে পারে কাতার।
উল্টো, কাতারই ২-১ গোলে বিজয়ী হয়ে !
কেএইচএন/প্রে/৭২২