Download WordPress Themes, Happy Birthday Wishes

পুরনো মৌসুম শেষ হতেই নতুন মৌসুমের প্রস্তুতি

ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ

মাত্রই শেষ হয়েছে ২০২১-২২ মৌসুমের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবল (বিপিএল) । টানা তৃতীয় শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের পেশাদার ফুটবল লীগে নতুন ইতিহাস গড়েছে বসুন্ধরা কিংস । অভিষেকের পর বসুন্ধরা ছাড়া আর কোন ক্লাব হ্যাট্রিক লীগ শিরোপা পায় নি । যদিও পুরনো দল হিসেবে ঢাকার সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লীগ আর বিপিএলে একমাত্র ঢাকা আবাহনী ক্রীড়া চক্রের হ্যাট্রিকের রেকর্ড আছে । আর মোহামেডানের আছে সিনিয়র ডিভিশনে একমাত্র অপরাজিত হ্যাট্রিক চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব ।

সদ্য সমাপ্ত বিপিএলে বসুন্ধরা ২২ ম্যাচে ৫৭ পয়েন্ট নিয়ে শিরোপা জিতেছে । অন্যদিকে ঢাকা আবাহনী রানার্স আপ হয়েছে ৪৭ পয়েন্ট নিয়ে । অন্যদিকে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব তৃতীয় হয়েছে ৩৭ পয়েন্ট জোগাড় করে । ১২ দলের লীগের শেষ দুইটি স্থানে থাকা উত্তর বারিধারা আর স্বাধীনতা ক্রীড়া সংঘ নেমে গেছে পেশাদার ফুটবলের দ্বিতীয় স্তর বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স লীগে । অন্যদিকে চ্যাম্পিয়ন্স লীগের শীর্ষ দুই দল ফরটিস ফুটবল ক্লাব আর এএফসি উত্তরা উঠে এসেছে বিপিএলে ।

সর্বশেষ লীগে ‘সেরা গোলদাতা’ হওয়ার প্রতিযোগিতা ছিল দুর্দান্ত । যদিও শেষ ম্যাচে চার গোল করে সেরা গোলদাতা হয়েছেন মোহামেডানের অধিনায়ক সোলেমান দিয়াবাতে । মালির ফরোয়ার্ডের গোলের সংখ্যা ২১টি । দ্বিতীয় স্থানে থাকা চট্টগ্রাম আবাহনীর পিটার থ্যাংকগড করেছেন ২০ গোল । আর ঢাকা আবাহনীর ডরিয়েলটন গোমেজের ১৮টি ।

২০০৭ সাল থেকে শুরু হওয়া বিপিএলে বিদেশী ফুটবলারদের সেরা গোলদাতা হওয়া একপ্রকার ধরাবাঁধা নিয়ম । শুধু ২০০৯-১০ মৌসুমে ঢাকা আবাহনীর হয়ে এনামুল হক ২১ গোল করে জিতেছিলেন বিপিএলের সেরা গোলদাতার পুরস্কার । সেটাই প্রথম আর শেষ । আর এবার তো দেশের ফুটবলাররা গোল পাওয়ার ক্ষেত্রে ছিলেন অবিশ্বাস্য রকমের ‘নিষ্ক্রিয়’ । বিদেশীদের ভিড়ে আরেক ভিনদেশের বাংলাদেশী এলিটা কিংসলে পেয়েছেন ছয় গোল । এটাই সর্বশেষ বিপিএলে বাংলাদেশের ফুটবলারদের সবেচেয়ে বেশী গোল! এছাড়া নাবিব নেওয়াজ জীবন , ফয়সাল আহমেদ ফাহিম , জুয়েল রানা আর মোহাম্মদ জুয়েলরা পেয়েছেন পাঁচটি করে গোল ।

যাই হোক , ২০২১-২২ মৌসুম এখন অতীত । সামনে লম্বা বিরতি । পরবর্তী মৌসুমের দিন-তারিখ ঘোষণাও বাকী । তবে ইতোমধ্যে পেশাদার ফুটবলের কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়ার ঘোষণা দিয়ে সাইফ স্পোর্টিং ক্লাব দিয়েছে বড় ধাক্কা । যদিও তাদের বয়সভিত্তিক একাডেমী দল থাকবে দ্বিতীয় বিভাগে , কিন্তু পেশাদার লীগ থেকে সরে যাওয়ায় ক্লাবের মুল খেলোয়াড়রা পড়েছেন বিপাকে । নিজেদের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে নতুন দল খুঁজে নেয়ায় মরিয়া ক্লাবের ফুটবলাররা । এর মধ্যেই সাইফের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া , নাইজেরিয়ান ফরোয়ার্ড এমফন সানডে , আবিদ আহমেদ, নিহাত জামান উচ্ছ্বাস ও রহিম উদ্দিনরা যোগ দিচ্ছেন শেখ রাসেল ক্রীড়া চক্রে ।

সর্বশেষ বিপিএলে ষষ্ট স্থান পাওয়া শেখ রাসেল আগামী মৌসুমের জন্য গড়তে চায় সেরা দল । ২০১২-১৩ মৌসুমে বিপিএল শিরোপা জিতেছিল শেখ রাসেল । আর ২০১৪-১৫ ছিল রানার্স আপ ।

এদিকে , আগামী মৌসুমের জন্য আবারও শক্তিশালী দল গড়ায় মনযোগী হয়েছে বসুন্ধরা । দেশের ফুটবলে নিজেদের সেরা প্রমাণের পর এখন তাদের লক্ষ্য এশিয়ান ক্লাব কাপ প্রতিযোগিতার দিকে । তাই আগামীতে একটি শক্তিশালী স্কোয়াড গঠনের লক্ষ্যে ঢাকা আবাহনী থেকে ডিফেন্ডার টুটুল হোসেন বাদশা, উইঙ্গার রাকিব হোসেনকে নিচ্ছে বসুন্ধরা । শোনা যাচ্ছে , ঢাকা আবাহনীর ব্রাজলিয়ান ডরিয়েলন গোমেজ আগামী মৌসুমে চড়াবেন বসুন্ধরার জার্সি ।

অন্যদিকে, ঢাকা আবাহনী দলে ভেড়াচ্ছে সাইফের উইঙ্গার ফয়সাল আহমেদ ফাহিম এবং মিডফিল্ডার মারাজ হোসেনকে । সাথে নতুন আসছেন উত্তর বারিধারা থেকে পাপন সিং, চট্টগ্রাম আবাহনী থেকে সোহেল রানা এবং মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব থেকে মাসুদ রানা মৃধা ও আলমগীর মোল্লা । এছাড়া বসুন্ধরা কিংস থেকে এলিটা কিংসলেকে নেয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে আবাহনী ।

এছাড়া শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব শক্তিশালী দল গড়ায় মন দিয়েছে । নবাগত ফরটিস ক্লাব নিজেদের একাডেমী থেকে উঠে আসাদের সাথে জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের দিকে হাত বাড়াবে বলে চাউর হয়েছে খবর । কর্পোরেট দলটি আনবে উন্নত বিদেশী ফুটবলার । বসুন্ধরা আর সাইফের মত লীগে মনোযোগ কাঁড়ার লক্ষ্যে নিজেদের গোছাচ্ছে ক্লাবটি । অন্যদিকে সর্বশেষ লীগে পঞ্চম স্থান পাওয়া মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব দলবদলের প্রশ্নে এখনও নীরব । যদিও ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটির কর্তারা বলছেন , আগামী মৌসুমে শক্তিশালী দল গঠন করবেন । কিন্তু পুরনোদের মধ্যে সোলেমান দিয়াবাতে , মোহাম্মদ রাজীবদের সাথে চুক্তি নবায়ন করেছে মোহামেডান । এছাড়া রহমতগঞ্জের সানোয়ার হোসেন আগামী বছর খেলবেন মোহামেডানে । এর বাইরে মোহামেডানের নতুন খেলোয়াড় সংগ্রহের অগ্রগতি খুব বেশী জানা যায় নি ।

আহাস/ক্রী/০০৫