Download WordPress Themes, Happy Birthday Wishes

জিম্বাবুয়ের মাটিতে সর্বস্বান্ত বাংলাদেশ

ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ

টি-টুয়েন্টি সিরিজ হারের জন্য না হয় সিনিয়র ক্রিকেটারদের বাদ দিয়ে স্কোয়াড গঠনকে দায়ী করা যায় । কিন্তু ওয়ানডে সিরিজে সেই ‘অজুহাত’ চলছে না । একমাত্র সাকিব আল হাসান ছাড়া সিনিয়র আর অভিজ্ঞ ক্রিকেটারদের নিয়েই ওয়ানডে সিরিজে জিম্বাবুয়ের মুখোমুখি হয়েছিল টাইগাররা । কিন্তু তাতে লাভ হয় নি । টানা দুই ম্যাচ হেরে একদিনের সিরিজ ঠিকই খুইয়ে বসেছে বাংলাদেশ ।

রবিবার (৭ আগস্ট) জিম্বাবুয়ের কাছে দ্বিতীয় ম্যাচেও পাঁচ উইকেটে হেরেছে বাংলাদেশ । আর তাতে এক ম্যাচ হাতে রেখেই সিরিজ জয় নিশ্চিত করেছে স্বাগতিকরা । এখন উল্টো বাংলাদেশের সামনে তিন ম্যাচ সিরিজে হোয়াইট ওয়াশ হওয়ার হাতছানি ।

হারারেতে দ্বিতীয় ম্যাচে খুঁজে পাওয়া গেছে প্রথম ম্যাচের সাদৃশ্য । সেই ম্যাচেও জিম্বাবুয়ের ইনিংসে ছিল জোড়া সেঞ্চুরি । যার মধ্যে একটি ছিল জীবনের সেরা ফর্মে থাকা সিকান্দার রাজার । আজ সেই রাজা সেঞ্চুরি করেছেন । প্রথম ম্যাচের মত আজও তাকে আউট করতে পারে নি বাংলাদেশের কোন বোলার । পার্থক্য হচ্ছে , প্রথম ম্যাচে সিকান্দার রাজার সাথে সেঞ্চুরি করেছিলেন ইনোসেন্ট কাইয়া । আর আজ অধিনায়ক রেগিস চিকাবা ।

মিল আছে আরও । প্রথম ম্যাচের মতই জোড়া সেঞ্চুরিতে রাজা আর চিকাবাকে বাংলাদেশের ফিল্ডাররা ক্যাচ ফেলে সুযোগ করে দিয়েছেন ম্যান জয়ের ।৪২ রানে রাজাকে নিশ্চিত রান আউটের সুযোগ পেয়েও জীবন দান করেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ । যার মাশুল বংলাদেশ গুনেছে সিকান্দার রাজার অপরাজিত ১১৭ রানের ইনিংসে । ১২৭ বলের মোকাবেলায় রাজা মেরেছেন আটটি চার আর চারটি ছক্কা ।

অথচ ২৯১ রানের টার্গেটে জিম্বাবুয়ের শুরুটা ছিল প্রথম ম্যাচের মতই নড়বড়ে । ৪৯ রানেই স্বাগতিকরা হারায় চার উইকেট । তারপরেই ম্যাচে শুরু হয় চিকাবা আর রাজার ম্যাজিক । দুজনে মিলে পঞ্চম উইকেটে যোগ করেন ২০১ রান । এটি একদিনের ক্রিকেটে জিম্বাবুয়ের পঞ্চম উইকেটে সর্বোচ্চ জুটি । আগের রেকর্ড ছিল গ্র্যান্ড ফ্লাওয়ার আর মারে গুডউইনের ১৮৬ রান । যা ছিল ২০০ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে । এছাড়া এটি যে কোন উইকেটে জিম্বাবুয়ের তৃতীয় সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড ।

চিকাবার ব্যাট থেকে আসে ১০২ রান । মাত্র ৭৫ বলের মোকাবেলায় দশটি চার আর দুইটি ছক্কা মেরেছেন অধিনায়ক চিকাবা । এটি চিকাবার ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে সেঞ্চুরি ।

চিকাবা আউট হলেও রাজা থেমে যান নি । বাকী পথ তিনি পাড়ি দিয়েছেন টনি মুনিয়ঙ্গার সাথে অবিচ্ছিন্ন ৪১ রানের পার্টনারশিপে । মুনিয়ঙ্গা ১৬ বলে দুইটি করে চার আর ছক্কায় ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন ।

বাংলাদেশের হয়ে হাসান মাহমুদ আর মেহেদি হাসান মিরাজ দুইটি করে উইকেট পেয়েছেন । একটি উইকেট দখলে নিতে পেরেছেন তাইজুল ইসলাম ।

এদিকে ম্যাচের শুরুতে বাংলাদেশের ইনিংসে সর্বোচ্চ ৮০ রান এসেছে মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের ব্যাট থেকে । তিনি ৮৪ বলের অপরাজিত ইনিংসে মেরেছেন তিনটি করে চার-ছক্কা । এছাড়াও হাফসেঞ্চুরির দেখা পেয়েছেন তামিম ইকবাল খান । টাইগার অধিনায়ক খেলেছেন ৪৫ বল । মেরেছেন দশটি চার এবং একটি ছক্কা ।

শুরুতে রানরেট ছয়ের উপর থাকলেও মাঝে নেমে আসে পাঁচের নিচে। মুশফিক-শান্তর ৫০ রানের জুটি গড়ে এগিয়ে নিতে থাকেন দলকে। মুশফিক ২৫ ও শান্ত ৩৮ রান করেন। এরপর খেলার হাল ধরেন মাহমুদউল্লাহ-আফিফ হোসেন ধ্রুব । দুজনে ৮১ রানের জুটি গড়েন। আফিফ ৪১ রানে আউট হয়েছেন । তিনি ৪১ বল খেলে চারটি চারের দেখা পেয়েছেন ।

বল হাতে তিন উইকেট নিয়ে সিকান্দার রাজা ছিলেন সেরা । সে কারণে ম্যাচের সেরাও তিনি । টি-টুয়েন্টি সিরিজের পর রাজার ওয়ানডে সিরিজেও সেরা হওয়া নিয়ে কোন সন্দেহ নেই ।

২০১৩ সালের পর প্রথমবারের মত ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশকে হারালো জিম্বাবুয়ে ।অথচ এই মুহূর্তে ওয়ানডে ক্রিকেটে সবচেয়ে ভাল অবস্থায় ছিল বাংলাদেশ । কিছুদিন আগেই ওয়েস্ট ইন্ডিজকে তাদের মাটিতে  হোয়াইট ওয়াশ করে এসেছে টাইগাররা । সিরিজে  হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার মত দলকেও । কিন্তু জিম্বাবুয়ের মাটিতে   ওয়ানডে ক্রিকেটের সব গর্ব ধুলিস্যাত বাংলাদেশের । তাই  তামিম ইকবাল এন্ড কোংকে দেশে ফিরতে হবে সর্বস্বান্ত হয়েই । 

আহাস/ক্রী/০০৯