ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ
বর্ণ-বৈষম্যের কারণে দীর্ঘ ২২ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলায় নিষেধাজ্ঞা ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার উপর । সেই সময়ে দক্ষিণ আফ্রিকা খেলতে পারে নি আন্তর্জাতিক কোন আসর কিংবা সিরিজ । সেই সময় কি আবার ফিরে আসছে ? দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেটে কিন্তু সেই আশংকাই ফিরে এসেছে আবার ।
সম্প্রতি দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট বোর্ডের উপর সরকারী হস্তক্ষেপের অভিযোগ উঠেছে । আইসিসির নিয়ম অনুযায়ী যেকোনো দেশের ক্রিকেট বোর্ডে সরকারি হস্তক্ষেপ অবৈধ। সরকারের এমন আচরণের জন্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নিষিদ্ধ করতে পারে আইসিসি।
জানা গেছে, দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট বোর্ডের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দেশটির অলিম্পিক কমিটি। সেই সঙ্গে বোর্ডের কর্মকর্তাদের সরে দাঁড়াতে বলা হয়েছে। এটা আইসিসি’র নিয়মের সরাসরি লঙ্ঘন । চলতি বছর একই কারণে ক্রিকেট থেকে সাময়িকভাবে নিষিদ্ধ হয়েছিল জিম্বাবুয়ে । যদিও অনেক দেন-দরবার আর নিজেদের ভুল শুধরে জিম্বাবুয়ে আবার ফিরে পেয়েছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার অধিকার ।
দক্ষিণ আফ্রিকার স্পোর্টস কনফেডারেশন ও অলিম্পিক কমিটি যৌথভাবে সিএসএকে একটি চিঠি দিয়েছে বলে জানিয়েছে ‘ক্রিকবাজ’ । সেই চিঠিতে তারা বোর্ডের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সরে দাঁড়ানোর জন্য বলেছে। অনেক দিন ধরেই বোর্ডে তাঁরা নানা ধরনের অসৎ আচরণ ও দুর্নীতি করে আসছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। তাঁদের এসব কর্মকাণ্ডের কারণে ক্রিকেটের প্রতি দেশের মানুষ, স্পনসর আর খেলোয়াড়েরা আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়েছে বলেও মনে করে দক্ষিণ আফ্রিকার স্পোর্টস ফেডারেশন ও অলিম্পিক কমিটি । সেই কারণেই কঠোর সিদ্ধান্তে গেছে তারা ।
দক্ষিণ আফ্রিকার সরকার পর্যায়ের সংগঠন দুটির সিদ্ধান্ত আইসিসি মেনে নেবে কিনা সন্দেহ । আইসিসি নিয়ম ভাঙ্গার অভিযোগ আনলে যে কোন মেয়াদে নিষিদ্ধ হতে পারে দক্ষিণ আফ্রিকা ।
উল্লেখ্য , বাইশ বছর আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে নির্বাসনে ছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। বর্ণবাদের কারণে ১৯৭০ সাল থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত কোন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার সুযোগ পায়নি দক্ষিণ আফ্রিকা। দলের প্রত্যেকটা ক্রিকেটার সাদা চামড়ার হওয়ার কারণে এবং ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মত সাদা চামড়ার মানুষদের দেশের সাথে খেলতে চাওয়ার কারণেই আইসিসি তাদেরকে বাইশ বছর নিষিদ্ধ করে রেখেছিল ক্রিকেট থেকে। তবে কিংবদন্তী নেলসন মেন্ডেলার হাত ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদ নির্মূল হওয়ার পর থেকে সাদা-কালো বৈষম্য অনেকটাই কমে আসে।
আহাস/ক্রী/০০৪