Download WordPress Themes, Happy Birthday Wishes

ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের সম্মতিতেই সাকিবের বিরুদ্ধে তদন্ত !

ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ

সাকিব আল হাসানকে জুয়াড়িদের কাছ থেকে পাওয়া প্রস্তাব গোপন করায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘আইসিসি’ , এটা এখন পুরনো সংবাদ । কিন্তু সাকিবের ঘটনা তদন্তের পেছনে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিসিআই) সম্মতি ছিল বলে খবর বেরিয়ে এসেছে ।

সাকিবের বিরুদ্ধে আইসিসি’র তদন্তে বিসিসিআও’র কোন ভুমিকা ছিল না , এমনটাই ছিল দাবী । কিন্তু তারা যে এই তদন্তে সম্মতি দিয়েছে সেটা বিসিসিআই স্বীকার করেছে ‘বিবিসি বাংলা’ কাছে ।

বুধবার (৩০ অক্টোবর) ‘বিবিসি-বাংলা’ কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে সাকিবের তদন্তে বিসিসিয়াই’র সম্মতির কথা জানিয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডের দুর্নীতি দমন ইউনিটের (এসিইউ) প্রধান অজিত সিং শেখাওয়াত ।

শেখাওয়াত জানিয়েছেন , ‘ সাকিবের বিরুদ্ধে আইসিসি’র তদন্তে আমরা কিছুই করি নি । বস্তুত আইসিসি-ই একটি ব্যাপার নিয়ে তদন্ত করছিল, যাতে কিছু আন্তর্জাতিক ইস্যু জড়িত ছিল – আর সেখানে আইপিএলের নামও এসেছিল। ‘

তিনি জানান , ‘ আমরা শুধু আইসিসিকে এই তদন্তে সম্মতি দিয়েছিলাম । আইপিএলের আয়োজক হিসেবেই আমরা এমনটা করেছি । ‘

সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে আইসিসির দীর্ঘ রায়ে আইপিএলের যে ম্যাচটির প্রসঙ্গ উল্লেখ করা হয়েছে, সেটি খেলা হয়েছিল ২০১৮ সালের ২৬শে এপ্রিল। ওই ম্যাচটিতে সাকিবের টিম সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদ কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে ১৩ রানে জেতে।

শেখাওয়াত জানান , ‘ আইপিএলের বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছিল আইসিসি নিজেই । কাজেই এখানে আমাদের কোন প্রত্যক্ষ কোন ভুমিকা নেন , থাকার কথা না । ‘

তার মানে কি এই তদন্তে পরোক্ষ ভুমিকা রেখেছে বিসিসিআই , এমন প্রশ্নের উত্তর অবশ্য পাওয়া যায় নি ।

২০১৮ সালের আইপিএল শেষ হবার পরেই অজিত সিং শেখাওয়াত ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডে দুর্নীতি দমন ইউনিটের দায়িত্ব নেন। তার কথায় বোঝা যাচ্ছে , সাকিবের বিষয়টি সামনে এসেছে আইপিএল নিয়ে আইসিসি’র তদন্তের কারণেই । আর আইসিসি বিষয়টি আগে থেকেই ভারতীয় বোর্ডকে জানিয়েছিল ।

আইসিসি’র অভিযোগ , দীপক আগরওয়াল নামের এক ‘বুকি’র সাথে হোয়াটসঅ্যাপ যোগাযোগের কারণেই নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছেন সাকিব । ভারতে ক্রিকেটকে ঘিরে যে বিরাট বেআইনি জুয়া ও বেটিংয়ের চক্র চালু আছে, তার খোঁজখবর রাখেন , এমন অনেকেই বলেছেন দীপক আগরওয়াল এই সার্কিটে একজন ‘পরিচিত মুখ’।

ভারতের বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমেও তাকে বর্ণনা করা হচ্ছে একজন ‘ব্ল্যাকলিস্টেড’ বা কালো তালিকাভুক্ত বুকি হিসেবে।

দীপক আগরওয়াল প্রসঙ্গে অজিত সিং শেখাওয়াত বিবিসিকে বলেন, ‘ইনি ব্ল্যাকলিস্টেড কি না বলতে পারব না । তবে আমাদের ভাষায় তিনি একজন ‘পার্সন অব ইন্টারেস্ট’।’

‘ক্রিকেট বুকি’ দীপক আগরওয়ালের সম্বন্ধে খোঁজখবর করতে গিয়ে বিবিসি অন্তত দুটি ঘটনার খোঁজ পেয়েছে – যার দুটিতেই অভিযুক্তের নাম দীপক আগরওয়াল।

প্রথম ঘটনায় ২০১১ সালে রাজস্থানের উদয়পুর শহরের ঘন্টাঘর এলাকায় বিজয় কুমার নামে এক উঠতি ক্রিকেটার ক্রিকেট বেটিং চক্রে জড়িয়ে পড়ে সর্বস্বান্ত হয়ে আত্মহত্যা করেছিলেন।

নিজের সুইসাইড নোটে তিনি নিজের এই পরিণতির জন্য দায়ী করে গিয়েছিলেন দীপক আগরওয়ালকে। অভিযোগ করেছিলেন, দীপকই না কি তাকে ক্রিকেট জুয়ার চক্রে টেনে এনেছিলেন।

উদয়পুর শহরের পুলিশ কর্মকর্তাও তখন এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, দীপক আগরওয়ালের কাছ থেকে ৫ লক্ষ রুপি আদায় করে তার পরিবারকে দেয়ার জন্য সুইসাইড নোটে অনুরোধ করে গেছেন নিহত ওই যুবক। দ্বিতীয় ঘটনায় ২০১৭ সালে ভারতের ছত্তিশগড় রাজ্যের পুলিশ ক্রিকেটের স্পট ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকার অভিযোগে রায়গড় শহরে জনৈক দীপক আগরওয়ালকে গ্রেফতার করে।

সেই ঘটনায় দুই সঙ্গী সমেত দীপক আগরওয়ালকে জেলেও যেত হয়, তবে কিছুদিনের ভেতরই তিনি ছাড়া পেয়ে যান। তবে এই দুটি ঘটনায় জড়িত দীপক আগরওয়াল আর সাকিব আল হাসানের সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ এক্সচেঞ্জে জড়িয়ে পড়া দীপক আগরওয়াল একই ব্যক্তি কি না, তা নিশ্চিতভাবে এখনও বলা যাচ্ছে না।

আহাস/ক্রী/০০১