Download WordPress Themes, Happy Birthday Wishes

ভারত আর বাংলাদেশের পার্থক্য যেখানে !

ক্রীড়ালোক প্রতিবেদকঃ

একটা সময়ে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে বাংলাদেশ আর ভারত ছিল ফুটবলে একেবারে কাছাকাছি । দুই দল ছিল একে অপরের প্রতিপক্ষ । কিন্তু সেই সময় এখন ইতিহাস । বাংলাদেশ আর দক্ষিণ এশিয়ার মান ছাড়িয়ে ভারত এখন চলে গেছে অনেকদূর । ফিফা র‍্যাংকিংয়ে বাংলাদেশ নেই ভারতের ধারেকাছে ।

এই মুহুর্তে ফিফা র‍্যাংকিংয়ের ১০৪ নাম্বার স্থানে আছে ভারত । আর বাংলাদেশ আছে ১৮৭ নাম্বার স্থানে । চলতি সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে প্রকাশিত হয়েছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ‘ফিফা’র এই র‍্যাংকিং । এই র‍্যাংকিং থেকেই বাংলাদেশের সাথে এক সময়ের প্রতিপক্ষ ভারতের গড়ে ওঠা বিশাল পার্থক্য সহজেই বোঝা যায় । শুধু ভারত কেন , এই মুহূর্তে ১৫৩ অবস্থানে থাকা মালদ্বীপ বাংলাদেশের চেয়ে অনেক এগিয়ে । অথচ এই মালদ্বীপকে এক সময় গোলবন্যায় ভাসিয়েছে বাংলাদেশ । কিন্তু সেসব এখন শুধুই স্মৃতি ।

আগামী অক্টোবরে কাতার বিশ্বকাপের বাছাই পর্বে দুইটি কঠিন ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ । ১০ অক্টোবর ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে আগামী বিশ্বকাপের স্বাগতিক কাতারের । আর ১৫ অক্টোবর ভারতের বিপক্ষে খেলবে কোলকাতায় । এই দুই ম্যাচের জন্য ইতোমধ্যেই প্রস্তুতি শুরু করেছে ব্রিটিশ কোচ জেমি ডের অধীনে বাংলাদেশ দল ।

কাতার বর্তমান এশিয়ান চ্যাম্পিয়ন । তাদের সাথে বাংলাদেশের কোন তুলনা হয় না । অন্যদিকে এই মুহূর্তে ফুটবলে বাংলাদেশের জন্য ভারত রীতিমত পরাশক্তি । তার উপর খেলা তাদের মাঠে । এই ম্যাচ নিয়েও খুব বেশী কিছু আশা করার নেই বাংলাদেশের ।

কিন্তু এক সময়ে বাংলাদেশের প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত কি করে এত এগিয়ে গেল ফুটবলে ? এটার উত্তর হচ্ছে , সঠিক পরিকল্পনা আর বাস্তাবয়ন । কয়েক বছর আগেই ভারত ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে খেলার জন্য নিজেদের মিশন টার্গেট করেছে । নিয়মিত খেলছে নিজেদের চেয়ে এগিয়ে থাকা ফুটবল শক্তিদের সাথে ।

নিজেদের দেশে নিয়মিত আয়োজন করছে ইন্টারন্যাশনাল কাপের মত আসর । খেলেছে ত্রিদেশীয় সিরিজ । আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচেও শক্ত প্রতিপক্ষের সাথে মোকাবেলা হচ্ছে ভারতর । চলতি বছরের শুরুর দিকে এশিয়ান কাপের মুল পর্বে খেলা ভারত হারিয়েছে থাইল্যান্ডকে । ইন্টারন্যাশনাল কাপে খেলেছে উত্তর কোরিয়া , সিরিয়া আর তাজিকিস্তানের বিপক্ষে । মোট কথা , পরিকল্পনামাফিক ভারত আন্তর্জাতিক ফুটবলে এখন নিয়মিত খেলছে ভাল ভাল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে ।

অন্যদিকে বাংলাদেশ অনেক সময় প্রীতি ম্যাচের প্রতিপক্ষই খুঁজে পায় না । তাদের দৌড় নেপাল কিংবা ভুটান পর্যন্তই । আসন্ন বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ভারত আর কাতারের বিপক্ষে ম্যাচের আগে নিজেদের প্রস্তুত করতে বাংলাদেশ আবারও মুখাপেক্ষী ভুটানের । আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর ও ৩ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ম্যাচ দুইটির আয়োজন করেছে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) । ভুটানের সাথে খেলে বিশ্বকাপ বাছাইয়ের জন্য বাংলাদেশ কতটুকু প্রস্তুত হতে পারবে , সেটা প্রশ্নসাপেক্ষ । এরচেয়ে নিজ দেশের কোন ক্লাবের বিপক্ষে খেললেও হয়ত ভাল প্রস্তুতি হত , মনে করেন অনেকেই । ।

এদিকে ভারতের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আগামী বছর ক্রোয়েশিয়ার সাথে ম্যাচ । সর্বশেষ রাশিয়া বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলা লুকা মড্রিচ আর ইভান রাকিটিচদের ক্রোয়েশিয়া আসছে ভারতের বিপক্ষে খেলতে । সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী বছর ২৩ ও ৩১ মার্চ হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ভিত্তিতে দুটি ফিফা ফ্রেন্ডলি ম্যাচ খেলবে ক্রোয়েশিয়া এবং ভারত।

বিশ্বকাপের রানার্স আপ ক্রোয়েশিয়ার সাথে ম্যাচ খেলার যে সাহস সেটা দেখেই বোঝা ভারত আসলে কি চাইছে ফুটবলে ! এই ভারত ২০২৬ সালে না হলেও নিকট ভবিষ্যতে বিশ্বকাপ আসরে খেললেও অবাক হবার কিছু থাকবে না । এমনকি সেটা আয়োজক হিসেবে হলেও । কারণ ইতোমধ্যেই ভারতে সফলভাবে হয়েছে ফিফার যুব বিশ্বকাপ । আগামীতে হতে চলেছে নারীদের বয়সভিত্তিক বিশ্বকাপ ফুটবল । অদুর ভবিষ্যতে সরাসরি কিংবা স্বাগতিক হিসেবে ভারত বিশ্বকাপ ফুটবলে খেললেও সেটা কোন অলীক ঘটনা হবে না ।

আহাস/ক্রী/০০৫